কর্মকর্তারা বলছেন, বিভিন্ন সময়ে কাজ করতে গিয়ে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে কাস্টমসের মতবিরোধও দেখা দিচ্ছে। তাই এই মুহূর্তে বিমানবন্দরটিকে শুল্ক বন্দর ঘোষণা করা জরুরি।
তবে গত বছরের ২৪ জুলাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরটিকে শুল্ক বন্দর ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়। এর আলোকে ঢাকা কাস্টমস্ হাউসের তৎকালীন কমিশনার মো. লুৎফর রহমান (বর্তমানে এনবিআরের সদস্য, শুল্কনীতি) ২১ ডিসেম্বর প্রায় লাখ টাকা খরচ করে কাস্টমস্ এয়ারপোর্টের চৌহদ্দি-সীমানা নির্ধারণে দাগ ও খতিয়ান নম্বর সংক্রান্ত ভূমির ম্যাপসহ যাবতীয় তথ্যাদি এনবিআরে পাঠান। দ্রুত কাস্টমস্ বিমানবন্দর ঘোষণায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ফের অনুরোধ জানিয়ে গত ০৮ ফেব্রুয়ারি এনবিআরের সদস্যের (কাস্টমস্ নিরীক্ষা, আধুনিকায়ন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য) কাছে বার্তা পাঠান তিনি।
কাস্টমস্ আইনের ধারা ৯ অনুসারে শুল্ক বন্দর ও শুল্ক বিমানবন্দর ঘোষণা এবং ধারা ১০ অনুসারে অবতরণ স্টেশনগুলোর অনুমোদন ও শুল্ক স্টেশনের সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। ঘোষিত স্থান ও স্টেশন কাস্টমস্ বন্ডেড এলাকা হিসেবে ঘোষিত হবে, যেখানে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে জনগণকে সেবা দেবেন কাস্টমস্ কর্মকর্তারা।
ধারা ৪২ অনুসারে বাইরের যেকোনো স্থান থেকে বাংলাদেশে প্রবেশরত কোনো যানের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি শুল্ক স্টেশন ছাড়া প্রথম অবস্থায় যানবাহনটিকে অন্য কোনো স্থানে অবতরণের ব্যবস্থা বা অনুমতি দিতে পারবেন না। ধারা ৫৩ অনুসারে কোনো জাহাজ বা উড়োজাহাজ শুল্ক বন্দর থেকে পোর্ট ক্লিয়ারেন্স ছাড়া বাংলাদেশের বন্দর ত্যাগ করতে পারবেন না।
ওই আইন অনুসারে বন্ডেড এলাকার মধ্যে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী কাস্টমস্। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক কাস্টমস্ আইন অনুসারে বিমানবন্দরে কাস্টমস্ সম্পর্কিত কোনো কাজ অন্য কোনো সংস্থা করতে পারবে না।
ফলে শুল্ক বন্দর ঘোষণা না দেওয়ায় শাহজালালে কাস্টমস্ যেমন সব কাজ করতে পারে না, ব্যবসা-বাণিজ্য-শুল্কের জন্য সুবিধাজনক ও জনবান্ধব এসব পদ্ধতিও চালু করা যায়নি।
ঢাকা কাস্টমস্ হাউসের কমিশনার প্রকাশ দেওয়ান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আইন অনুসারে যে বন্দর বা বিমানবন্দরে কাস্টমস্ কাজ করবে, সেটিকে কাস্টমস্ বন্দর ঘোষণা করতে হবে। শাহজালাল বিমানবন্দরে সেটি না হওয়ায় কাস্টমস্ কর্মকর্তাদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে এটিকে কাস্টমস্ বন্দর বা শুল্ক স্টেশন ঘোষণায় কাজ শুরু করেছে এনবিআর। আশা করছি, অচিরেই এ ঘোষণা হয়ে যাবে’।
এনবিআরের সদস্য (শুল্কনীতি) মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমি যখন ঢাকা কাস্টমসের কমিশনার ছিলাম, তখন শাহজালালকে কাস্টমস্ বন্দর ঘোষণা করতে সকল কাগজপত্র এনবিআরে পাঠানো হয়। আমরা সর্বাত্মকভাবে বিষয়টির সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি’।
এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ চলছে। রাজস্ব আহরণের পাশাপাশি দেশের মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে কাস্টমস্। আমরা অচিরেই শাহজালালকে কাস্টমস্ বন্দর ঘোষণা করবো’।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৭
এসজে/এএসআর