তিনদিন পর শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাতে পেঁয়াজ এসেছে রাজধানীর পাইকারি বাজার সদরঘাটের শ্যামবাজারে। এর বেশিরভাগই ভারতীয় পেঁয়াজ।
রোববার (২৯ অক্টোবর) সকালে তাই শ্যামবাজারে পেঁয়াজের পাইকারি দর এবং কারওয়ানবাজারে খুচরা মূল্য বেশিই দেখা গেছে। তবে পাইকারি ব্যাবসায়ীদের অভিযোগ, খুচরা বাজারেই বেশি মুনাফা করা হচ্ছে।
আবার আগামী কয়েক মাসের পেঁয়াজের বাজারও আমদানির ওপরই নির্ভর করবে বলেই মনে করছেন আড়ৎদাররা। তারা বলছেন, চাষি-ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণে দেশি পেঁয়াজ আনছেন, তা চলমান সংকট মোকাবেলায় যথেষ্ট নয়।
শ্যামবাজারের ৪টি আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারিতে কেজিপ্রতি দেশি পেঁয়াজ (মোটা) ৬৮ থেকে ৭০ টাকা, দেশি (মিডিয়াম) ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা, ভারতীয় এলসি ৫০ টাকা, ভারতীয় নাসিক (মোটা) ৫২ থেকে ৫৩ টাকা ও ভারতীয় সাউথ ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে কারওয়ানবাজারের আড়ৎগুলোতে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৭৪ থেকে ৭৬ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৫৭ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ বাজারেই খুচরা বিক্রেতারা ৮০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।
তবে আগামী একমাসের মধ্যে বাজারে ভারতীয় নাসিক পেঁয়াজের আমদানি বেশি হলে দাম কিছুটা কমবে বলে আশা করছেন শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীরা।
আঁগারগাও ও ফার্মগেটের প্রায় ১০টি মুদি দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ৪টি দোকান এখন পেঁয়াজ বিক্রি করছে না, যেগুলো কয়েকদিন আগেও বিক্রি করেছে।
আগারগাঁওয়ের তালতলার মুদি ব্যবসায়ী সোহরাব বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাজার থেকে ৭০-৭৫ টাকায় পেঁয়াজ কিনে মুদি দোকানে বিক্রি করা কঠিন। মানুষ ভাবেন, বাজারে গেলে কম দামে কিনতে পারবেন। তাই ৪ দিন আগে মজুত শেষ হওয়ার পর আর নতুন পেঁয়াজ আনা হয়নি’।
শ্যামবাজারের মেসার্স বাণিজ্যালয়ের ব্যবস্থাপক মুক্তার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়, তা দিয়ে আসলেই ১২ মাস চলা সম্ভব নয়। তাই আমাদেরকে আমদানির ওপরই নির্ভর করতে হয়’।
‘এখন গ্রামের হাটেও পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। দেশি পেঁয়াজের মৌসুম শেষ প্রায়। আবার জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে’।
ভারতীয় পেঁয়াজের যথেষ্ট সরবরাহ বাজারে না এলে দাম কমার লক্ষণ নেই বলেও মনে করছেন তিনি।
পাবনা, ফরিদপুর ও কুষ্টিয়া থেকেই দেশি পেঁয়াজের প্রায় নব্বই শতাংশ পূরণ করা হয়। তবে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ এবার বিগত বছরগুলোর মতোই ছিল বলেও জানান মুক্তার হোসেন।
ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম বলেন, বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় এ সংকট তৈরি হয়েছে।
নিজের ও অন্যদের গোডাউন দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বেশি আসে পেঁয়াজ। সরবরাহ কম থাকায় জায়গা খালি পড়ে আছে’।
তবে তার দাবি, আড়ৎদাররা কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ পয়সা লাভ করেন। অন্যদিকে খুচরা বিক্রেতারা কেজিতে ১০ টাকা করে লাভ করছেন, যেটি সহনীয় নয়।
পাবনার একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজ এখন হাটেও নেই বললেই চলে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ কম আসায় আমাদের হাতেও নেই’।
শ্যামবাজার থেকে ৫৪ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কেনেন আজিমপুরের একজন মুদি দোকানদার। ‘কতো টাকা করে বিক্রি করবেন?’- জানতে চাইলে মুচকি হেসে বলেন, ‘আমাদের বিক্রির কোনো নির্দিষ্ট দাম নেই’।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৭
এমএন/এএসআর