ঢাকার পাইকারি ও খুচরা পান বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগামী এপ্রিল মাসের আগে পানের দাম নিম্নমুখী হবে না।
রাজধানীর শ্যামবাজারের পাইকারি পান ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উৎকৃষ্টমানের রাজশাহীর পানের প্রতি গাদি বিক্রি হচ্ছে ২৮ হাজার টাকা, যা আগে ছিল ২৪ হাজার টাকা, মাঝারি মানের প্রতি গাদি পান বিক্রি হচ্ছে ২৪ হাজার টাকায়, যা আগে ছিল ১৩-১৫ হাজার টাকা ও ছোট পানের প্রতি গাদি বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার টাকা, যা আগে ছিল ১৬শ টাকা।
পান বিক্রেতাদের হিসাব অনুযায়ী প্রতি ৮০ পিস পানে এক বিড়া আর প্রতি ৮০ বিড়ায় এক গাদি পান হয়।
রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজারে পানের সবশেষ খুচরা বিক্রির তথ্য অনুযায়ী, উৎকৃষ্টমানের বরিশাল ও রাজশাহীর পানের প্রতিবিড়া বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা, যা আগে ছিল ১২৫-১৫০ টাকা, মাঝারি মানের প্রতিবিড়া পান বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়, যা আগে ছিল ১২০ টাকা ও ছোট আকারের পানের প্রতিবিড়া বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, যা আগে ছিল ২০-২৫ টাকা করে।
বৃহস্পতিবার (১ মার্চ) রাজধানীর শ্যামবাজারের পানের পাইকারি বিক্রেতা ও রাজধানীর বেশ কয়েকটি খুচরা বাজারের পান বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, শৈত্যপ্রবাহ ও প্রচণ্ড কুয়াশার কারণে চুয়াডাঙা, বরিশাল ও রাজশাহী এলাকায় পান চাষের প্রায় অর্ধেক ব্যাপকভাবে নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে যেসব চাষি বিভিন্নভাবে কিছু পান বাঁচাতে পেরেছেন সেসব পান এখন বাজারে আসছে। এই পান চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে বাজারে দাম বাড়ছে।
‘বাজারে যদি ভারতীয় পান এ মুহূর্তে না আসতো তাহলে পানের দাম আরও কয়েকগুণ বেশি হতো। তাই নতুন চাষের পান বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম কমছে না। ’
এ বিষয়ে রাজধানীর শ্যামবাজারের শাপলা পান বিতানের মালিক মো. ইউসুফ বাংলানিউজকে বলেন, যে হারে পান নষ্ট হয়েছে, সে হারে দাম বাড়েনি। ফলন নষ্ট হওয়ায় আগের তুলনায় পানের আমদানি অনেক কম হচ্ছে। এ অবস্থা আরও দেড় মাস চলবে। এপ্রিলের ১৫ তারিখ নাগাদ নতুন পান বাজারে আসবে, তখন থেকে দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফার্মগেটে খুচরা পান বিক্রেতা মো. হাছান বাংলানিউজকে বলেন, মান অনুযায়ী পানের দাম বিড়াপ্রতি ১৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতো দামে পান আগে কখনো বিক্রি করেনি। ফলে আমাদের কাছ থেকে যারা পান কিনে বিক্রি করেন তারাও বিপদে পড়েছেন।
তিনি বলেন, ৫ টাকায় একটি পান বানিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। যেহেতু আগের থেকে দাম বেশি, তাই এই টাকায় তাদের লস হবে।
তবে যারা প্রতিনিয়ত পান কিনে খাচ্ছেন তারা অভিযোগ করে বলেন, দাম বাড়ায় আগের মতো আস্ত বড় পান বিক্রেতারা দিচ্ছেন না। কোনো সময় একটি পানের অর্ধেক, আবার কখনো একটি বড় পানের অর্ধেক ও ছোট পানের অর্ধেক মিলিয়ে দিচ্ছেন বিক্রেতারা।
এ বিষয়ে রাজধানীর মহাখালীতে ভাসমান পান বিক্রেতা খায়রুল বলেন, দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আগের মতো বিক্রি করলে লাভ দূরে থাক, মূল টাকাও থাকবে না। তাই বড়-ছোট মিলিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৭ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৮
এমএসি/এএ