বৃহস্পতিবার (১০ মে) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানিয়েছেন।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরোও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার মো. রুহুল আমিন, বারডেম হাসপাতালের নিউটেশন বিভাগের প্রধান শামসুন্নাহার নাহিদ (মহুয়া) প্রমুখ।
ক্যাব সভাপতি বলেন, চিনি, পেঁয়াজ, তেল, খেঁজুর, ছোলা, ডালসহ রমজানের প্রযোজনীয় পণ্যের দাম বাড়ে। কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা সবাই বলছেন এবার মজুদ পর্যাপ্ত আছে। দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই। তাহলে হঠাৎ করে চিনি, পেঁয়াজের দাম কেন বাড়ছে। এর মূল কারণ সিন্ডিকেট।
তিনি বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম কঙ্কট তৈরি করে বাজারকে অস্থির করছে। অন্যদিকে যানজট, জাহাজজট, চাঁদাবাজিসহ নানা অব্যবস্থপনার কারণে এ দাম বাড়ছে।
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির ব্যাখ্যায় গোলাম রহমান বলেন, গত সপ্তাহে সাত-৯দিন সরকারি ছুটি ছিল। এতে পেঁয়াজ আমদানি কম হয়েছে এমন অজুহাতে দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু চিনির দাম বাড়াচ্ছে পুরাই সিন্ডিকেট করে। তিনি বলেন, একটি পণ্য ১ থেকে ২ টাকা বাড়তে পারে। কিন্তু এক দু’দিনের ব্যবধানে ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়া অস্বাভাবিক। এখন সরকারে উচিত বাজার মনিটনিং বাড়ানো। একই সঙ্গে যারা অনৈতিক ভাবে দাম বাড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া।
ক্রেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, রোজা উপলক্ষে এক সঙ্গে অধিক পরিমাণ পণ্য না কিনে স্বাভাবিক সময়ে যে পণ্য কিনে সেই ভাবে কিনতে হবে। তাহলে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াতে পারবে না।
দোকান মালিক সমিতির চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বলেন, ব্যবসা এখন ব্যবসায়ীরা করছে না। এটা রাজনৈতিক দলের কাছে চলে গেছে। ফলে সব ক্ষেত্রে চাঁদাবাজির পরিমাণ বেড়ে গেছে। আগে একটি দোকানের জন্য ভাড়া দিতে হতো ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ টাকা। এখন ৩০ হাজার টাকার বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে ভোক্তাদের উপরে। পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেন তিনি।
তিনি বলেন, প্যাকেটজাত পণ্য সরাসরি মিল থেকে খুচরা বিক্রতাদের কাছে যায়। ফলে এর দাম কম বাড়ে। কিন্তু খোলা পণ্য খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পৌঁছাতে তিন চার হাত বদল হয় ফলে এর দাম বেশি বাড়ে।
আমাদের দেশে সবজি বা কাঁচা পণ্য সংরক্ষণের ভালো ব্যবস্থা নেই। তাই বেশি উৎপাদন হলেও বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এবার টমেটো বেশি উৎপাদন হয়েছে কিন্তু পর্যপ্ত কোল্ড স্টোর নেই। কাঁচামরিচের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। এ কারণে রমজানে চাহিদা বাড়লে দাম বেড়ে যায়। কিন্তু সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে এসব পণ্যের দাম হঠাৎ করে বাড়তো না।
রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার মানভেদে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজের বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা ও আমদানি পেঁয়াজের দাম ৩২-৩৮ টাকা। দুই সপ্তাহ আগেরও দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩২ থেকে ৩৫ টাকা আর আমদানি পেঁয়াজের দাম ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা। আর দুই দিনের ব্যবধানে প্রতিকেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা বেড়ে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয় ৬২ থেকে ৬৫ টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৮
এমএফআই/এসএইচ