শনিবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর কমলাপুর পশুর হাট ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র গেছে।
কমলাপুর রেল স্টেশন নিকটবর্তী বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম এলাকা সংলগ্ন পশুরহাট ঘুরে দেখা যায়, সেখানে কুষ্টিয়া, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাকে করে গরু নিয়ে এসেছেন বেপারীরা।
মূলত শুক্রবার (১৭ আগস্ট) থেকে গরু আসা শুরু হলেও বিক্রেতারা বলছেন, বেচাকেনা শুরু হবে ঈদের এক-দু’দিন আগে থেকে।
কুষ্টিয়ার গাংনী উপজেলা থেকে শুক্রবার ট্রাকে নয়টি গরু নিয়ে এসেছেন বেপারী মো. নাসির। তিনি বলেন, বেচাকেনা কাল (রোববার) থেকে শুরু হবে।
দেশি কয়েকটি জাতের গরু নিয়ে প্রতিটির দাম হাঁকছেন ৮০ হাজার থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। চার মণ মাংসের ওজনের গরুর দাম হাঁকছেন ৯৫ হাজার টাকা। জেঠাল, করাচ জাতের গরুগুলোই এবারের বাজারে সেরা আকর্ষণ বলে জানান তিনি।
নাসির জানালেন, এরই মধ্যে একজন ক্রেতা এসে একটি গরুর দাম করছেন ৮০ হাজার টাকা। যেটি লাখের নিচে বিক্রি সম্ভব নয়।
তপ্ত রোদে গাছের সঙ্গে ত্রিপল দিয়ে তৈরি ছাউনির নিচে একটি বড় গরু ঘিরে জটলা করছে শিশু-কিশোরেরা। কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ওবায়দুল হক দেশি জাতের একটি বড় গরু নিয়ে এসেছেন।
কথা বলে জানা গেলো, এই গরুতে মাংস হবে প্রায় ১৮০ থেকে ২০০ কেজি। এক-দু’জন ক্রেতার সঙ্গে উৎসুক জনতার জবাবে দাম হাঁকছেন ৭ লাখ টাকা।
এই বিশালাকৃতির গরু নিয়ে গরমের মধ্যে বিপাকে পড়েছেন ওবায়দুল ও তার সঙ্গীয় কয়েকজন। কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় পৌঁছতে নির্দিষ্ট সময়ে চেয়ে যানজটে পড়ে লেগেছে বাড়তি ছয় ঘণ্টা। শুক্রবার রাতে নিয়ে এসে শনিবার সকালে গরুকে তখন স্যালাইন গুলিয়ে খাওয়াচ্ছিলেন তারা।
বাংলানিউজকে ওবায়দুল বলেন, গরমে গরুটি খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। পেট তলিয়ে গিয়ে শরীর ছেড়ে দিয়েছে। এরই মধ্যে একবার ডাক্তারও দেখানো হয়। ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে।
স্টেডিয়ামের পশ্চিমাংশে গরু নিয়ে বসেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গার হাটবাড়ী এলাকার রমজান আলী। কোরবানি উপযোগী বিভিন্ন বয়সের ১৭টি গরু নিয়ে শনিবার সকালে ঢাকায় এসেছেন তিনি।
ট্রাক থেকে নামিয়ে গরুগুলোকে ত্রিপলের ছাউনির নিচে রাখা হয়েছে। জানালেন, এখন বেচা বিক্রি নেই। মাত্র এসেছি। দীর্ঘ জার্নির দখল গেছে পশুর উপর দিয়েও, এখন তাদের যত্ন-আত্তি প্রয়োজন।
বাংলানিউজকে রমজান আলী বলেন, ক্রেতারা তিন-চার দিন আগে গরু নিয়ে রাখবে কোথায়, খাওয়াবে কী? এজন্য এখন বাজারে এলেও তারা ঘুরে ঘুরে দেখছে আর চলি যাইতেছে। আরো এক-দু’দিন পর থেকে শুরু হবে কেনাবেচা।
স্টেডিয়াম সংলগ্ন পশুরহাট ছাড়াও গোপীবাগ, মধুমিতা সিনেমা হলের পেছনের এলাকাতেও হাট বসেছে। তবে হাটগুলো এখনও পূর্ণ হয়নি। ক্রেতাদেরও সমাগম নেই খুব একটা।
কোরবানির পশুর হাট ঘিরে নিরাপত্তা জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৮
এমআইএইচ/এমএ