শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে খুলনার সবচেয়ে বড় ইলিশের পাইকারি বাজার কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তে ইলিশ কিনতে আসা আজমল হোসেনের এমন অভিব্যক্তি।
তিনি বলেন, খুচরা বাজারে ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া।
ক্ষোভ প্রকাশ করে মেরাজুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, গত বছরের মতো এবার বাজারে দেখা নেই রূপালী ইলিশের। যদিওবা মেলে, তাতে হাত ছোঁয়াতে গেলেই ছ্যাঁকা লাগছে। অগ্নিমূল্য ইলিশ। আকারে ছোট হলেও দামটা অনেক বড়। অতো দাম দিয়ে যে ভালো ইলিশ মিলবে তারও কোনো গ্যারান্টি নেই।
আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা জানান, মাছের রাজা ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে। কিন্তু মোকামগুলোতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ইলিশ আমদানি হচ্ছে না। তাই কোটি কোটি টাকা লোকসান হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
তাদের মতে, প্রতি বছর এই সময় নদী ও সাগরে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়েছিলো। কিন্তু চলতি বছরে ঘটছে এর উল্টো। ভরা মৌসুমেও তেমন ইলিশ মিলছে না। যে কারণে দাম এত বেশি।
কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তের মুজাহিদ ফিসের আড়তদার আবু মুসা বাংলানিউজকে বলেন, ইলিশের মৌসুম চললেও সরবরাহ কম। মেঘনায়ও ইলিশ ধরা পড়ছে না। যে কারণে আমাদের পাইকারি বাজারেও ইলিশের আকাল, তাতে দাম বেশি।
তিনি জানান, প্রতি কেজি ৫০০ গ্রামের (পাইকারি) ইলিশ ৬০০-৬৫০ টাকা, ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৮শ’ টাকা ও ৮০০/৯০০ গ্রামের দাম হাজার টাকা, এক কেজি সাইজের ১২শ’ টাকা, এক কেজি ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের মূল্য ১৬০০-১৭০০ টাকা, আর দেড় কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের মূল্য ২ হাজার টাকা। প্রকারভেদে গত বছর এ সময়ে ইলিশের মূল্য ছিলো অর্ধেক।
তিনি বলেন, পাইকারি বাজার বলে এখানে মাছের মূল্য একটু কম। খুচরা বাজারে আমাদের এখানের চেয়ে প্রতিটি মাছের কেজি প্রতি ২০০-৩০০ টাকা বেশি।
মুসা জানান, আগে প্রতিদিন ইলিশবোঝাই ১০টি ট্রাক আসতো। এবার দুইটি ট্রাক আসছে। ফিসিং ট্রলারও আসতো ১২-১৪টা। যা এখন ২-৩টা আসে।
এস বেঙ্গল ফিসের প্রোপ্রাইটর প্রকাশ বাবু বাংলানিউজকে বলেন, ভরা মৌসুমেও চলছে ইলিশের আকাল। এ সময় জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ার কথা। কিন্তু উপকূলের নদ-নদীতে ইলিশের দেখা মিলছে না। ভোলা ও বরিশালের মোকামে আমাদের অনেক টাকা দেওয়া। সেখানেও মাছ নেই। চরদোয়ানিতে কিছু মাছ আছে। মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি।
কেসিসি রূপসা সাদামাছ আড়তদার বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুর রহমান জন্টু বাংলানিউজকে বলেন, ইলিশ না পেয়ে নদী থেকে প্রতিদিনই জেলেদের প্রায় শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর এখন পযর্ন্ত ইলিশ কম ধরা পড়েছে। প্রতিবছর আমাদের বাজারে যে মাছ আসে এবার তার চারভাগের এক ভাগ আসছে। বরিশালের নদ-নদীতে তেমন মাছ ধরা পড়ছে না। পায়রা, বিশখালী, বলেশ্বরের মাছ তেমন ধরাই পড়ছে না। চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমুদ্রের কিছু মাছ আসছে। তার স্বাদ না থাকায় ক্রেতারা কিনছেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮
এমআরএম/জেডএস