বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ধর্মঘট ডেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে রফতানি বাণিজ্য বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশি পণ্যবাহী ট্রাক চালকরা।
জানা যায়, ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের বিভিন্ন অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা এবং সেখানকার নিরাপত্তা সদস্যদের হাতে বাংলাদেশি ট্রাক চালকদের হয়রানি ও মারধরের প্রতিবাদে এ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
বন্দর সূত্রে জানায়, প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ ট্রাক বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য ভারতে রফতানি হয়। আর ভারতীয় পণ্য আমদানি হয় প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ ট্রাক। বর্তমানে সপ্তাহে ৬ দিনে ২৪ ঘণ্টা নিরলস ভাবে ভারতীয় পণ্যের আমদানি বাণিজ্য চললেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশি রফতানি পণ্য খালাসে ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেনা। এতে ট্রাক আটকে থাকায় লোকসান গুণতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
সূত্র আরও জানায়, ভারতীয় ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের সময় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সেসব ট্রাকে তল্লাশি না চালালেও ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশি পণ্যবাহী সব ট্রাকে কোনো কারণ ছাড়াই দীর্ঘ সময় ধরে তল্লাশি চালায়। এতে রফতানি বাণিজ্য মারাত্মক বিঘ্নিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, বেনাপোল বন্দরে ভারতীয় ট্রাক চালকদের জন্য থাকা-খাওয়ার সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা থাকলেও পেট্রাপোল বন্দরে ট্রাক চালকদের জন্য শুধুমাত্র টয়লেট ছাড়া অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই।
আবার, ভারতীয় ট্রাক চালকরা পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টা বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে যাতায়াতের সুযোগ পেলেও বাংলাদেশি ট্রাক চালকদের ক্ষেত্রে এ সুবিধা দেওয়া হয়না। পাশাপাশি সামান্য কারণেই বিএসএফ সদস্যরা তাদের মারধর করে।
বিষয়টি নিয়ে বহুবার ভারতীয় বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ করার পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এতে বাধ্য হয়েই বাংলাদেশি ট্রাক চালকরা ভারতের সঙ্গে রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রেখেছে।
এ ব্যাপারে যশোর জেলা ট্রাক ও ট্রাকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের বেনাপোল শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহিন বাংলানিউজকে জানান, ভারতীয় বন্দর কর্তৃপক্ষের হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড পরিহারের বিষয়ে সুষ্ঠু পদক্ষেপ না আসা পর্যন্ত বাংলাদেশি ট্রাক চালকরা পেট্রাপোল বন্দরে কোনো রফতানি পণ্য নিয়ে ঢুকবে না।
এদিকে সকালে বেনাপোল বন্দর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় বন্দরের বিভিন্ন সড়কে প্রায় সহস্রাধিক বাংলাদেশি ট্রাক রফতানি পণ্য নিয়ে অপেক্ষা করছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তারা রফতানি পণ্য এনেছেন। এসব পণ্যের মধ্যে পাট ও পাটজাত দ্রব্য, কেমিকেল ও তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য রয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আজিজুর রহমান সকাল ১১টায় বাংলানিউজকে জানান, পেট্রাপোল বন্দরের কিছু সমস্যা নিয়ে এপথে রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও ভারত থেকে আমদানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে। বাণিজ্যের স্বাভাবিক পরিবেশ তৈরি করতে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে বলেও বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
এজেডএইচ/এসএ/এসএইচ