ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ আশ্বিন ১৪৩১, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘অন-অ্যারাইভাল’ ভিসা সুবিধা চায় ইন্দোনেশিয়া

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
‘অন-অ্যারাইভাল’ ভিসা সুবিধা চায় ইন্দোনেশিয়া বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

ঢাকা: দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছে ২৬ কোটি ভোক্তার বাজার এবং বৃহত্তম মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া। এজন্য ইন্দোনেশীয় নাগরিকদের জন্য ল্যান্ডিং ভিসা বা অন-অ্যারাইভাল ভিসা চালু, বিজনেস ভিসা সহজীকরণ ও মুক্তিবাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ওপর জোর দিয়েছে দেশটি।

ঢাকায় নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত রিনা সোয়েমারনো বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসে এসব প্রস্তাব দেন।

ভিসা সহজীকরণের কথা উল্লেখ করে ইন্দোনেশীয় রাষ্ট্রদূত বলেন, ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকদের বাংলাদেশের ভিসা পেতে খুব কষ্ট হয়।

আমাদের ৫ মিলিয়ন তরুণ-তরুণী সারাবিশ্বেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু তারা বাংলাদেশে আসতে পারছে না। তাদের কাছে সুন্দরবন-কক্সবাজার তুলে ধরতে হলে এখানে আসার সুযোগ দিতে হবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, সব বাংলাদেশি আমাদের দেশে অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পান। কিন্তু সামান্য কিছু ক্যাটাগরি ছাড়া বাংলাদেশ ইন্দোনেশীয় নাগরিকদের এ সুবিধা দেয় না। ভিসার ভোগান্তিতে ব্যবসায়ীরাও আসতে পারেন না। এটা দূর করলে বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসবে। বিনিয়োগ ও পর্যটন সহায়তা বাড়বে।

এ সময় দুই দেশের মধ্যে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ওপর গুরুত্ব দেন ইন্দোনেশীয় রাষ্ট্রদূত রিনা সোয়েমারনো।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সাংবাদিকদের বলেন, ব্যবসার যদি সুযোগ থাকে সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা রাখতে চাই না। বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি অনেক বেশি। আমরা ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করি অনেক বেশি, কিন্তু রফতানি করতে পারি না।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ইন্দোনেশিয়ায় ২৬ কোটি লোক আছে। তারা তো আমাদের দেশে রফতানি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। আমরাও চাই আমাদের রফতানি বাড়ুক। কয়েকটা পণ্যের কথা তিনি (রাষ্ট্রদূত) বলেছেন, যেগুলো আমরা এক্সপোর্ট করতে পারি। সেগুলো হচ্ছে- ওষুধ, পাটজাত পণ্য ও সিরামিক।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে অন-অ্যারাইভ্যাল বা ল্যান্ডিং ভিসা চায় ইন্দোনেশিয়া। আমাদেরও এ সুবিধা দেয় তারা। কিন্তু আমরা দিচ্ছি না। বিষয়টি সহজ করে দিতে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো।

তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়ার ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে আসত চাইলেও নাকি ভিসা পেতে সমস্যা হয়। প্রথমত ল্যান্ডিং ভিসায় যদি হয়ে যায় তাহলে তো আর সমস্যাই রইলো না। সবার জন্যই ল্যান্ডিং ভিসা হয়ে যাবে। এটা হতে দেরি হলেও ব্যবসায়ীদের ভিসার ব্যাপারটি দ্রুত সহজ করা হবে। তারাও চায়, আমরাও চাই— দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ুক।

প্রি-ফ্রি ফিন্যান্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট হওয়ার কথা রয়েছে। সামনে এর প্রথম বৈঠক। এই চুক্তি যদি হয়, তাহলে আমাদের তৈরি পোশাকও ইন্দোনেশিয়াতেও ঢুকতে পারবে। কারণ, এখন ইন্দোনেশিয়ায় তৈরি পোশাক ঢুকতে শুল্ক একটা বড় বাধা। তাদের নিজস্ব যাই পণ্য থাক না কেন, আমাদের তৈরি পোশাক সে দেশে প্রতিযোগিতা করে টিকতে পারবে, যোগ করেন টিপু মুনশি।

বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য দুই দেশকেই উন্মুক্ত হতে হবে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমি বাণিজ্যকে আরও সহজ ও ভোগান্তিমুক্ত করতে চাই। আমি একদিকে বাণিজ্য ওপেন করার কথা বলবো আর মানুষ আসা যাওয়া করতে ভিসায় সমস্যা হবে, এটা হতে দেওয়া যাবে না।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ইন্দোনেশিয়া আমাদের দেশে বিনিয়োগও করতে চায়। তাদের একটা কোম্পানি আমাদের দেশে ১২০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে চায়। তবে এক্ষেত্রে ইজি অব ডুয়িং বিজনেস বড় বাধা। সারাবিশ্বে এ সূচক আমাদের খুব ভালো নয়। সেটা একটা প্রশ্ন রয়েছে। এটাও আমরা কাটাতে চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
আরএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।