ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

শ্রমিকরা চাইলে পোশাকখাতে কনফেডারেশন গঠন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
শ্রমিকরা চাইলে পোশাকখাতে কনফেডারেশন গঠন কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান

ঢাকা: শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দিলে পোশাকখাতের কর্মীদের সমস্যা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানের জন্য একটি সেক্টরাল কনফেডারেশন গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে আরএমজি বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী একথা জানান।

মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পখাতে শ্রমিকের জন্য একটি সেক্টরাল কনফেডারেশন গঠনের প্রস্তাব এসেছে।

এর ভিত্তিতে মালিক-শ্রমিক ও মন্ত্রণালয়— এই তিন পক্ষ বসে আলোচনা করেছি।

শ্রমিকরা এটাতে রাজি আছে কিনা- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা আলোপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত ও নাম দিলে গঠন করব। আর তারা (শ্রমিক নেতৃবৃন্দ) যদি বলেন এটার প্রয়োজন নাই, তবে আমরা মনে করি না যে, প্রয়োজন নাই। আমি মনে করি তারা বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের কাছে জানালে বাকি প্রক্রিয়া সুসম্পন্ন করবো।

সেক্টরাল কনফেডারেশন গঠনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এক সময় পাট ছিল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের এক নম্বর খাত। এরপর চিংড়ি-সাদা মাছ, এরপরে এসেছে গার্মেন্ট। এই গার্মেন্টে ৪০-৪৫ লাখ শ্রমিক কাজ করে। এখানে ট্রেড ইউনিয়ন আছে। শ্রমিকরা যখন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করে তখন নেতৃবৃন্দকে পাওয়া যায়। দাবি-দাওয়া মীমাংসা করার জন্যও পাওয়া যায়।

‘কিন্তু অনেক শ্রমিক আছে যে, কথা শুনতে চায় না। তখন আমাদের পুলিশি সহযোগিতা নিতে হয়। যাদের নিবন্ধন আছে তাদের দিয়ে একটি কমিটি দিয়ে কনফেডারেশন করে যাতে করে বসে তড়িৎ সমস্যার সমাধান করতে পারি, এ কারণে আজকে এটার প্রশ্ন এসেছে। ’

সেক্টরাল কনফেডারেশন গঠনের মাধ্যমে শ্রমিক আন্দোলন এড়ানো যাবে? এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রমিক আন্দোলন এড়ানো যাবে। আগে থেকেই আমরা বসে কথা বলে… যেমন আজকে শ্রমিকদের সেক্টরাল কী কী সমস্যা আছে। আমরা কিছুদিন আগে একটা মজুরি কাঠামো দিয়েছি।

‘এরপরও কিছু সমস্যা যেমন মামলা। আমাদের কথা হলো মামলা হয়েছে, আসামি ধরতে হবে- এটা তো মিথ্যা না। কিন্তু সিসি ক্যামেরা দিয়ে দেখে কারা ইনসিস্ট করেছে যে বের হও, মারধরও করা হয়েছে। আমরা বলেছি সিসি ক্যামেরা দেখে আসলে ওই ফ্যাক্টরির শ্রমিক আনরেস্ট করল কিনা, না বাইরের লোক এসে টেনে নিয়ে গেল এটা দেখে আইনত ব্যবস্থা। কিন্তু অযথা শ্রমিককে হয়রানি করা হবে না। ’

ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাউন্সিলের সংবাদ সম্মেলনে ৯৯ কারখানায় ১১ হাজারের মতো শ্রমিক ছাঁটাইয়ের অভিযোগ নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটার সংখ্যা আমরা জানি না। আমরা শুনেছি বলেই এই এজেন্ডা আছে। আমরা কল কারখানা অধিদপ্তর এবং লেবার উইং দিয়ে দেখবো। আমাদের কাজ মুখে শেষ হবে না। আমরা কর্মে পরিণত করে দেখাতে চাই।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছি নতুন মজুরি কাঠামো দেওয়ার পরে কত শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে- এটা নোট নিয়েছি। যে সব ফ্যাক্টরির নাম বলা হয়েছে সেখানে কল-কারখানার অধিদপ্তর দ্বারা এবং ২৯টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা তথ্য নিয়ে যদি সত্যি হয় তাহলে মালিকদের ডাকব, নেতৃবৃন্দকে ডেকে এটার সমাধান করব। আইন সবার জন্য সমান।

অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র মৃত শ্রমিকদের বিমা দাবির কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে ১৬৯ শ্রমিকের জন্য ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন প্রতিমন্ত্রী। প্রত্যেক শ্রমিক ২ লাখ করে টাকা পাবে।

এরআগে কেন্দ্রীয় তহবিল গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী ২৪৪ জনের কাছে প্রথমবার চেক হস্তান্তর করেছিলেন।

অনুষ্ঠানে শ্রম সচিব আফরোজা খানসহ বিজিএমইএ, বিকেএমইএ’র নেতা ও শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।