ইতোমধ্যে গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটনের এসি উৎপাদন কারখানায় শুরু হয়ে গেছে এ প্রকল্পের কাজ। বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি স্থাপনের মাধ্যমে এসি উৎপাদন লাইন বাড়ানো হয়েছে।
দেশের শিল্প-কারখানা, করপোরেট অফিস, শপিং মল, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আবাসিক ভবনসহ মাঝারি ও বড় আকারের বেশিরভাগ স্থাপনাতেই বেড়েছে এয়ার কন্ডিশনার বা এসির ব্যবহার। এসব স্থাপনার অধিকাংশতেই ব্যবহার হচ্ছ ভিআরএফ প্রযুক্তির এসি। কিন্তু, এ চাহিদার পুরোটাই মিটাচ্ছে বিদেশি ব্র্যান্ডগুলো।
খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, ওয়ালটন দেশেই ভিআরএফ প্রযুক্তির সেন্ট্রাল বা কমার্শিয়াল এসি উৎপাদন শুরু করায় এ খাতের সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভরতাই শুধু কমবে না, ভারী প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন শিল্পে ওয়ালটন তথা বাংলাদেশ আরেকটি নতুন মাইলফলক অর্জন করবে।
প্রকৌশলীরা জানান, ভিআরএফ প্রযুক্তিকে বলা হয় চতুর্থ প্রজন্মের সবচেয়ে আধুনিক শীতাতপনিয়ন্ত্রণ বা এয়ার কন্ডিশনিং ব্যবস্থা। একই সময়ে পুরো ভবনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখে এ প্রযুক্তি। একটি ভবনের ইনডোর এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটগুলোকে একটি সেন্ট্রাল কন্ট্রোল সিস্টেমের মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। ওয়ালটনের ভিআরএফ এসিতে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে কমফোর্ট কুলিং এবং ডুয়াল সেন্সিং সিস্টেম। ফলে, প্রয়োজন অনুযায়ী ঠাণ্ডা ও গরম বাতাস পাওয়া যাবে। এটি সুবিধামতো ঘরের যেকোনো স্থানে স্বল্প পরিসরে স্থাপন করা যাবে।
ওয়ালটন এসি বিভাগের চিফ অপারেটিং অফিসার প্রকৌশলী ইসহাক রনি জানান, বর্তমানে দেশে একশ কোটি টাকারও বেশি পরিমাণ ভিআরএফ এসি বিক্রি হচ্ছে। বাজার সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর হওয়ায় প্রবাসীদের কষ্টার্জিত রেমিট্যান্স এবং রফতানিকারকদের দ্বারা দেশের রিজার্ভে যুক্ত হওয়া বিশাল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বাইরে চলে যাচ্ছে। এ মুদ্রা সাশ্রয়ের উদ্দেশে দেশেই আন্তর্জাতিকমানের অত্যাধুনিক ভিআরএফ প্রযুক্তির এসি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে ওয়ালটন।
তিনি আরও জানান, ওয়ালটন কারখানায় ১৭ থেকে ২৫ টনের সিঙ্গেল মডিউলার ভিআরএফ এসি তৈরি হবে। মাঝারি স্থাপনায় শীতাতপনিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হবে এসব এসি। কারখানায় ইতোমধ্যে ভিআরএফ এসির পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। শিগগিরই শুরু হবে বাণিজ্যিক উৎপাদন।
প্রতিষ্ঠানটির পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ওয়ালটনের তৈরি ভিআরএফ এসিতে যুক্ত হয়েছে বিশ্বের লেটেস্ট সব প্রযুক্তি। অন্যান্য প্রযুক্তির তুলনায় ওয়ালটনের ভিআরএফ এসি চালু হতে বিদ্যুৎ খরচ হবে খুবই কম। এসব এসির কম্প্রেসরে ব্যবহার করা হচ্ছে বিশ্ব স্বীকৃত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব আর ৪১০ এ রেফ্রিজারেন্ট। ফলে, ওয়ালটনের ভিআরএফ এসি প্রায় ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হবে।
ওয়ালটনের ভিআরএফ এসিতে থাকবে অটোমেটিক স্টার্ট আপ ব্যবস্থা। অর্থাৎ এসি চলাকালে বিদ্যুৎ চলে গিয়ে আবার আসলে পুনরায় সেটিংয়ের প্রয়োজন পড়বে না। স্বয়ংক্রিয়ভাবে আগের অবস্থা অনুসারে ঠান্ডা বাতাস সরবরাহ করবে। দীর্ঘক্ষণ চললেও অতিরিক্ত গরম হবে না। দেশেই তৈরি বিধায় গ্রাহকরা পাবেন দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৯
ওএইচ/