ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কোরবানিতে পশুর চাহিদা মেটাতে খামারিদের হেলথ কার্ড

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৯
কোরবানিতে পশুর চাহিদা মেটাতে খামারিদের হেলথ কার্ড ফাইল ছবি

ঢাকা: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে মোট গরুর সংখ্যা ২ কোটি ৮১ লাখ ৮৯ হাজার। এর মধ্যে ষাঁড় ১ কোটি ৯ লাখ ৭৬টি এবং গাভীর সংখ্যা ১ কোটি ৭২ লাখ ১৩ হাজারটি।

প্রতি বছর কোরবানি ঈদে সাধারণত ৪২ থেকে ৪৪ লাখ গরু জবাই করা হয়। এর মধ্যে ৩০ লাখের যোগান আসে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিদের কাছ থেকে।

বাকি গরু ভারত, নেপাল অথবা মিয়ানমার থেকে আমদানি করা হয়। সরকার মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে চায়। বিশেষ করে কোরবানিতে যাতে অন্য দেশ থেকে গরু আমদানি করতে না হয় তার জন্য সমাধান পেতে নানা ধরনের উদ্যোগ হাতে নিয়েছে সরকার।
 
এরজন্য সারাদেশে গরু মোটাতাজাকরণের ওপর ১ লাখ ১০ হাজার ৫৭৫ জন খামারিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরমধ্যে ৫০ শতাংশ নারীকে সুযোগ দেবে সরকার। দেশের প্রান্তিক খামারিদের গরু মোটাতাজাকরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এসব মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন করা হবে। নির্বাচিত খামারিদের একটি করে হেলথ কার্ড দেওয়া হবে। সেখানে প্রশিক্ষণসহ সব উপকরণ বিতরণের তথ্য এবং গরুর স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য উল্লেখ থাকবে। এই কার্ড প্রকল্প পরিচালক অফিস এবং স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিসের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
 
সংশ্লিষ্ট উপজেলায় স্থানীয় পর্যায়ে গঠিত কমিটির মাধ্যমে যাদের কমপক্ষে দুটি বাড়ন্ত এঁড়ে, ষাড় বাছুর আছে বা পালন করার সামর্থ্য আছে তাদের মধ্য থেকে প্রতি বছর তিন ব্যাচে ৭৫ জন আগ্রহী প্রান্তিক খামারিকে সুফলভোগী হিসেবে নির্বাচন করা হবে। খামারি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে সরকার।
 
‘আধুনিক প্রযুক্তিতে গরু হৃষ্টপুষ্টকরণ’ প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৫০ কোটি টাকা। চলতি সময় থেকে ২০২১ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর।
 
প্রকল্পের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, মাংস উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে চায়। বর্তমানে কোরবানিতে দেশীয় গরুতে চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়েছি। এটা ধরে রাখতে নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে লক্ষাধিক খামারিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি হেলথ কার্ড দেওয়া হবে। গরুর স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন করতেই এমন উদ্যোগ। হেলথ কার্ড নিতে কোনো টাকা-পয়সা লাগবে না।  
 
প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ৪৯১টি উপজেলায় নির্বাচিত খামারিদের মধ্যে প্রযুক্তি হস্তান্তর করা হবে। দেশের সব এলাকায় ব্যাপকহারে গরু পালন করা হয় না। এলাকাভেদে গরু পালনের তারতম্য রয়েছে। ফলে সব উপজেলায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে না। গবাদি পশুর বাসস্থান, প্রাথমিক চিকিৎসা, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খড় প্রক্রিয়াজাতকরণ, সাইলেজ প্রস্তুতকরণ, খড় সংরক্ষণ পদ্ধতি, উন্নত ঘাস চাষ ও গরুর শারীরিক ওজন নির্ণয় পদ্ধতির বিষয়ে প্রশিক্ষণ পাবেন খামারিরা। ইউরিয়া ও মোলাসেস মিশ্রিত খড় পদ্ধতির বিষয়ে খামারিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে নিরাপদে গরু মোটাতাজাকরণ করা যায়।
 
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ গরু পালনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। এটা ধরে রাখতে সারাদেশে লক্ষাধিক খামারিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। দেশের সব জেলায় সমানতালে গরু পালন করা হয় না। যেসব এলাকায় বেশি হারে গরু পালন করা হয় সেই সব এলাকা বেছে নেওয়া হবে। খুব কম সময়ে এই কার্যক্রম সারাদেশে শুরু হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৯
এমআইএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।