ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘দেশের আর্থিক স্বাস্থ্য বুঝতে প্রতি বছর শুমারি জরুরি’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫২ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১৯
‘দেশের আর্থিক স্বাস্থ্য বুঝতে প্রতি বছর শুমারি জরুরি’ কৃষিশুমারি কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানসহ অন্যরা

ঢাকা: আমরা শরীর ঠিক রাখতে নিয়মিত চেকআপ করে থাকি। একইভাবে দেশের আর্থিক স্বাস্থ্য বুঝতে যেকোনো বিষয়ে প্রতি বছর শুমারি জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

রোববার (০৯ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোয় (বিবিএস) এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগাধীন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার গাইডলাইন অনুসারে সারা দেশে শহর ও পল্লি এলাকায় ‘কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি ২০১৮’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কৃষিশুমারি ২০১৯ পরিচালনা করতে যাচ্ছে।

এটি দেশব্যাপী বৃহৎ আকারে পরিচালিত অন্যতম পরিসংখ্যানিক কার্যক্রম। প্রতি দশ বছর অন্তর কৃষিশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। ৯ থেকে ২০ জুন পর্যন্ত সময়ে মাঠ পর্যায়ে শুমারির তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। এখন আমাদের বেশি প্রয়োজন উন্নত প্রজাতির মাছ ও সবজি। যাতে পুষ্টির কোনো অভাব বাঙালির থাকবে না। স্বাধীনতার অভাব নেই, এখন পুষ্টির অভাবও আমরা দূর করবো। আজকের দিনে এই আমাদের প্রার্থনা।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সুচারুরূপে, সুন্দরভাবে কাজ সম্পন্ন করা হবে, যাতে করে এটা বিশ্বমানের একটি কাজ হয় এবং আমরা যেন গর্ববোধ করতে পারি। এজন্য আমাদের সরকারের যা যা করা দরকার, আর্থিক, সাংগঠনিক, প্রাতিষ্ঠানিক– সবকিছু প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে দেবেন। তিন মাসের মধ্যে শুমারির প্রাথমিক ফল এবং ছয় মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ফল জানিয়ে দেওয়া হবে। এই শুমারিতে কোনো অসঙ্গতি চোখে পড়লে তা তুলে ধরার জন্যও অনুরোধ জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

এম এ মান্নান বলেন, শতকরা ১৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ আমাদের জাতীয় জিডিপিতে অবদান আছে কৃষির। এটা আরও বাড়বে আগামীতে। ধানের ক্ষেত্রে কমলেও মাছ, সবজি, ফলের ক্ষেত্রে অনেক বাড়বে। ধানের ক্ষেত্রে কমা মানে, ধান তো আমরা প্রচুর উৎপাদন করছি। এর প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি বলে আমার বিশ্বাস।

এম এ মান্নান বলেন, ‘আমাদের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য বোঝার জন্য কিছুদিন পরপর শুমারি করতে হয়। আমরা জনশুমারি করি, এটা অর্থনৈতিক শুমারি। এখান থেকে বুঝতে পারবো, কত ধান, কত গম, পাট, ফল, মাছ, গরু, মোষ, ভেড়া, হাস, মুরগি, টার্কি-এসব বিষয় সম্পর্কে আমরা জানতে পারবো। গোটা অর্থনীতি তার অবস্থান কেমন, তাও বুঝতে পারবো। আগেরটার সঙ্গে মিলিয়ে দেখবো, বাড়ছে না কমছে। বাড়লেও আনুপাতিক হারটা কী হারে বাড়ছে, এসব’।

কৃষিশুমারি প্রকল্পের পরিচালক (যুগ্মসচিব) জাফর আহাম্মদ খান জানান, কৃষিশুমারি পরিচালনার মাধ্যমে কৃষি খামার সংখ্যা, আকার, ভূমির ব্যবহার, কৃষির প্রকার, শস্যের ধরণ, চাষ পদ্ধতি, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির সংখ্যা, মৎস্য উৎপাদন ও চাষাবাদ সংক্রান্ত তথ্যাদি এবং কৃষি ক্ষেত্রে নিয়োজিত জনবল সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। এ তথ্য-উপাত্ত কৃষি ক্ষেত্রের উন্নয়ন কৌশল নির্ধারণ এবং অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে বেঞ্চমার্ক তথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটা দেশব্যাপী বৃহৎ আকারে পরিচালিত একটি পরিসংখ্যানিক কার্যক্রম। প্রতি দশবছর অন্তর কৃষিশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। পরিসংখ্যান আইন, ২০১৩ অনুযায়ী জনশুমারি এবং অর্থনৈতিক শুমারির পাশাপাশি কৃষিশুমারি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) পরিচালনা করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এদেশে ১৯৬০ সালে প্রথমবারের মতো নমুনা আকারে কৃষিশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ১৯৭৭ সালে প্রথম কৃষিশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৩-৮৪, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে কৃষিশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। ষষ্ঠবারের মতো দেশে কৃষিশুমারি ২০১৯ পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কৃষিশুমারিতে একজন প্রধান শুমারি সমন্বয়কারী, একজন জাতীয় শুমারি সমন্বয়কারী, একজন অতিরিক্ত জাতীয়  শুমারি সমন্বয়কারী, ১০ জন বিভাগীয় শুমারি সমন্বয়কারী, ৯০ জন জেলা শুমারি সমন্বয়কারী (ডিসিসি), ৪৯২ জন উপজেলা শুমারি সমন্বয়কারী (ইউসিসি), ২ হাজার ১২৭ জন জোনাল অফিসার, ২৩ হাজার ১৬৫ জন সুপারভাইজার এবং ১ লাখ ৪৪ হাজার ২১১ জন তথ্য সংগ্রহকারী কাজ করছেন।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) বিকাশ কিশোর দাস, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহারিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. কৃষ্ণা গায়েন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৯
এমআইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।