ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিদেশি পশু আমদানি হলে স্থানীয় খামারিদের লোকসানের আশঙ্কা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৯
বিদেশি পশু আমদানি হলে স্থানীয় খামারিদের লোকসানের আশঙ্কা

চাঁদপুর: আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে চাঁদপুরের স্থানীয় খামারিরা নিরাপদ গো-মাংস উৎপাদনের লক্ষে গবাদিপশু হৃষ্টপুষ্ট করে আসছে। তবে কোরবানির হাটে দেশীয় গরু, ছাগল ও বেড়ার পাশাপাশি আমদানিকৃত পশু আনা হলে লোকসানে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন খামারিরা। পশুরহাটগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। কারণ কোরবানির হাটগুলো বিদেশি পশু দিয়ে ভরপুর করে রাখা হয়। ফলে ক্রেতারা বড় গুরুর দিকে বেশি আকৃষ্ট হয়।

চাঁদপুর সদর ও হাজীগঞ্জ উপজেলার খামারিদের সঙ্গে কথা বলে ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর জেলায় প্রাণিসম্পদ বিভাগের তালিকাভুক্ত খামারি রয়েছেন দুই হাজার ৩৫৮ জন। বছরজুড়ে এসব খামারি ষাঁড়, বলদ, গাভী, ছাগল ও বেড়া হৃষ্টপুষ্ট করার চেষ্টা করেন।

সঠিক মূল্যে কোরবানির হাটে তাদের পশু বিক্রি করা তাদের উদ্দেশ্য। কিন্তু ভারত থেকে আমদানিকৃত পশু কোরবানির হাটে উঠলে পশুর চাহিদা কমে যায়। এ কারণে খামারিদের প্রতিবছরই লোকসান গুণতে হয়। এর মধ্যে অনেক খামারি আগ্রহ হারিয়ে এই ব্যবসা ছেড়ে দিচ্ছেন। গবাদি পশু।  ছবি: বাংলানিউজএ বছর জেলার ৮ উজেলায় ষাঁড়, বলদ, ছাগল ও বেড়াসহ প্রায় ৩৭ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। পশু মোটাতাজাকরণে ভেজাল খাদ্য পরিহার করে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ঘাস, খড়-খইল ইত্যাদি খাওয়ানো হয়েছে। এসব পশু কোরবানির হাটে বিক্রি করতে পারলে স্থানীয় চাহিদা মিটবে এবং খামারিদের বিনিয়োগের নিশ্চয়তা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

সদরের একটি খামারের দুইজন শ্রমিক বাংলানিউজকে বলেন, তারা সিরাজগঞ্জ থেকে এসে চাঁদপুরে গরু লালন-পালনের কাজ করছেন গত ৩ বছর। গরু মোটাতাজাকরণের জন্য নিজস্ব জমিতে উৎপাদিত ঘাষ, খইল, ভুসি ও খড় খাওয়ান। আমদানিকৃত পশু বাজারে আসলে আমাদের লোকসানে পড়তে হয়। তাদের জেলার কয়েকশ’ শ্রমিক চাঁদপুরের খামারগুলোতে কর্মংস্থান হয়েছে। মালিকদের লোকসান হলে তাদের কর্মসংস্থানও হ্রাস পাবে।

গবাদি পশু।  ছবি: বাংলানিউজহাজীগঞ্জ উপজেলার হাটিলা গ্রামের মির্জা ডেইরি ফার্মের মালিক জলিলুর রহমান মির্জা দুলাল বাংলানিউজকে বলেন, ২০০২ সালে ২টি গাভী দিয়ে তিনি ডেইরি ফার্ম শুরু করেন। এরপর গত কয়েক বছর পশু মোটাতাজা করে আসছেন। কিন্তু কোরবানির হাটে পশু বিক্রি করতে গেলে বিদেশি পশুর কারণে তাদের লোকসানে পড়তে হয়। বিদেশি পশু আমদানি বন্ধ করা প্রয়োজন। দেশীয় ভাবে উৎপাদিত পশু দিয়ে সারা বছরের মাংসের ও কোবানির পশুর চাহিদা মেটানো সম্ভব।

হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জুলিফকার আলী বাংলানিউজকে বলেন, হাজীগঞ্জ উপজেলায় ৫শ’ খামারি এ বছর ৬ হাজার পশু মোটাতাজা করেছেন। তারা কোনোভাবে যেন পশুর দেহে ক্ষতিকর গ্রোথ হরমোন প্রবেশ করাতে না পারে, সে জন্য আমাদের সব লোকবল চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। এই বিষয়ে আমরা খামারিদের নিয়ে বৈঠকও করেছি।

চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বখতিয়ার উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, দেশীয় খামারশিল্প বাঁচিয়ে রাখতে আমদানিকৃত পশু কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলে গবাদি পশু পালনের খামারগুলো আরো সমৃদ্ধ হবে। জেলার প্রায় আড়াই হাজার খামারিদের আমরা প্রশিক্ষণ ও নিয়মিত তত্ত্বাবধান করে আসছি। আসন্ন কোরবানির জন্য জেলায় প্রায় ৩৭ হাজার পশু এখন পর্যন্ত প্রস্তুত রয়েছে। কোরবানির আগ পর্যন্ত সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩১, জুলাই ২৫, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।