ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাধা কাটলে সিআইএসভুক্ত দেশে রপ্তানি বাড়বে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯
বাধা কাটলে সিআইএসভুক্ত দেশে রপ্তানি বাড়বে সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

ঢাকা: কমনওয়েলথ অব ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টেটসভুক্ত (সিআইএস) দেশগুলোর সঙ্গে বাধা দূর হলে রপ্তানি কয়েকগুণ বাড়বে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে। বিশ্ববাজারে দিনদিন তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে।

বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশে শ্রমিকরা কাজ করছে। দেশে একের পর এক গ্রিন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে।  বাংলাদেশ উজবেকিস্তানসহ সিআইএসভুক্ত দেশ-আজারবাইজান, বেলারুশ, কাজাখাস্তান, কিরগিজিস্তান, আর্মেনিয়া, মলদোভা, রাশিয়া এবং তাজিকিস্তান দেশগুলো বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দেশটির টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‌উজবেকিস্তান টেক্সটাইল কনফারেন্স ও ৫ দিনব্যাপী গ্লোবাল টেক্সটাইল ডে’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যকালে এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন উজবেকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইলিয়রগানিয়েভ, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত, আইএলও, আইএফসি প্রতিনিধিরা।

আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে কনফারেন্সের মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপনায় তৈরি পোশাক খাতের বিশ্ববাণিজ্য পরিস্থিতির হাল নাগাদ চিত্র তুলে ধরেন ও বাংলাদেশের ভূমিকা গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যালস ইত্যাদি প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কিছু জটিলতার কারণে প্রত্যাশা মোতাবেক পণ্য উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে না। জটিলতা নিরসনে উজবেকিস্তানের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। সিআইএসভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং রপ্তানি বাড়ানোর লক্ষ্যে গত মে মাসে ইউরেশিয়ান ইকনোমিক কমিশনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।

এর আগে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) উজবেকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইলিয়রগানিয়েভের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সভা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

তিনি বলেন, উজবেকিস্তান বাংলাদেশের ঘনিষ্ট বন্ধুরাষ্ট্র। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপতি স্পেশাল ইকনোমিক জোনে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক দেশ বাংলাদেশের স্পেশাল ইকনোমিক জোনে বিনিয়োগ শুরু করেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিকখাতের দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববাণিজ্যে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে।

উজবেকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইলিয়রগানিয়েভ বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর কথা বলেন।

তিনি বাংলাদেশ থেকে তৈরি করা পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যালস ইত্যাদি আমদানি বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের অন্যান্য সদস্য এবং উজবেকিস্তান সরকারের বিনিয়োগ ও পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী এবং কৃষি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী।

পরে বাণিজ্যমন্ত্রী উজবেকিস্তনের চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ফোরামের রাউন্ড টেবিল বৈঠকে যোগ দেন। এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের তৈরি করা পোশাক ছাড়াও পর্যটন, যৌথ বিনিয়োগ, ঢাকা-তাসখন্দ সরাসরি ফ্লাইট চালু এবং বাংলাদেশের স্পেশাল ইকনোমিক জোনে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

বাণিজ্যমন্ত্রী উজবেকিস্তান সরকারের ও বাণিজ্য প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশ সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান।

সভায় বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও উজবেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্য, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

উজবেকিস্তানের পক্ষ থেকে চেম্বারের সভাপতি আধামইকরামভ ছাড়াও বিনিয়োগ ও পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী লাজিজ কুদরাতভ ও উজবেকিস্তানের ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক সারদোরকারিয়েভ বক্তব্য রাখেন।

আলোচনায় দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনা কাজে লাগানোর উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

গত ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ উজবেকিস্তানে রপ্তানি করেছে ২৯ দশমিক ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করা হয়েছে ১৯৩ দশমিক ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা ও বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯
জিসিজি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।