ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সিলেটে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৯
সিলেটে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ পেঁয়াজ, ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট:  একের পর এক অভিযানেও নিয়ন্ত্রণহীন পেঁয়াজের বাজার। কিছুদিন আগেও আগুন দাম ছিল পেঁয়াজে। মাঝে কিছুদিন দাম কমে হয় ৮০ টাকা। মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে সেই পেঁয়াজ কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দু’একদিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম বেড়ে ২শ টাকাতে যেতে পারে!

শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে সিলেটের খোলাবাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ১৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের পেঁয়াজের দাম দেড়শ’ টাকায় পৌঁছে গেছে বলে জানা যায়।

অথচ দু’দিন আগেও খোলাবাজারে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছিল ৮০ টাকা।

হঠাৎ কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে যাওয়া উদ্বেগে আছেন সিলেটের ক্রেতা সাধারণ। পেঁয়াজের দাম বাড়ার নেপথ্যে সিন্ডিকেট করাকে দায়ী করছেন তারা।

নগরের রিকারি বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা রুকন আহমদ জানিয়েছেন, পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই যাতায়াত খরচসহ খুচরা দোকানগুলোতে ১৩০ টাকা বিক্রি করাই স্বাভাবিক। পেঁয়াজ, ছবি: বাংলানিউজক্রেতারা বলছেন, নিত্যপণ্য পেঁয়াজে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হয়েছে। আর সিলেটের ক্ষেত্রে একটু বৃষ্টিপাত হলেই বাজারে হরিলুট শুরু হয়ে যায়।

সরেজমিন নগরের জিন্দাবাজার মের্সাস জহির উদ্দিন তারু মিয়া অ্যান্ড সন্স, রিকাবিবাজার মা স্টোরসহ বিভিন্ন খুচরা দোকানের ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আমরা কেবল স্থায়ী ক্রেতাদের মন রক্ষার্থে অল্প পেঁয়াজ এনে বিক্রি করছি। নয়তো পেঁয়াজ বিক্রি করতামই না।

নগরের জিন্দাবাজার চেইন শপ রিফাত অ্যান্ড কোং’র ব্যবস্থাপক ইমামুর রহমান শুভ বাংলানিউজকে বলেন, পাইকারি বাজারে ১২০ টাকা, এজন্য পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি।  

তিনি আরও বলেন, আমরাতো দামে কিনে এনে ভর্তুকি দিয়ে বেচতে পারবো না। অথচ ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের জরিমানা করেন। যারা সিন্ডিকেট করেন, তাদের ধরতে পারেন না।

জেলা প্রশাসনের কৃষি বিপণন মার্কেটিং কর্মকর্তা মো. মোরশেদ কাদের বাংলানিউজে বলেন, কিছুদিন আগেও খবরে দেখেছি ২০ হাজার টন পেঁয়াজ দেশে এসেছে। সিলেটের বাজারে অভিযান চালালে, তারা পেঁয়াজের সংকট দেখাচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন ১০/১২ ট্রাকের স্থলে এখন ১/২ ট্রাক পেঁয়াজ আসছে। যেকারণে দাম বাড়ছে।  

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সিলেটের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে চাহিদার যোগান দেওয়ার এখতিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। চাহিদার যোগানের ভিত্তিতে দাম বাড়ে কমে। আর সরকার থেকেও পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দেয়নি। এরপরও আমরা অভিযানকালে কেনাবেচার মূল্যের ফারাক দেখছি। তাতে কোনো বিস্তর ব্যবধান পাইনি। একজন ব্যবসায়ী পেঁয়াজ কিনে ৪/৫ টাকা লাভ করতেই পারেন। এরপরও দোকানিদের বলছি, যাতে তারা কোনো ধরনের কারসাজিতে না জড়ান।

তিনি আরও বলেন, রোববার (২৭ অক্টোবর) থেকে পেঁয়াজ কেন্দ্রীক অধিদফতরের কার্যক্রম আরও বাড়ানো হবে। এছাড়া পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যাপারিদের বিষয়টি নজরে আনা হবে। যদি তাদের কথায় দাম উঠা-নামা করে, তাহলে এটা খুবই খারাপ। এর বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাত্র ১৫ ব্যাপারি নিয়ন্ত্রণ করছেন পুরো সিলেটের পেঁয়াজের বাজার। নগরের কালিঘাট পেঁয়াজের পাইকারি বাজারে অভিযান চালাতে গিয়েও এমন তথ্য পায় জেলা প্রশাসনও। যাদের মুখের কথায় উঠা-নামা করে পেঁয়াজের বাজার। ফোনে অর্ডার করলে গাড়ি আসে। বাজারে সংকটও সৃষ্টি করতে পারেন তারা।   কিন্তু এসব ব্যাপারিদের বিষয়ে এখনো কোনো অ্যাকশনে যায়নি জেলা প্রশাসন।

পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক এম কাজি এমদাদুল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি রিসিভ না করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৯
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।