ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ধানের দামের অজুহাতে ফের বাড়লো চালের দাম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
ধানের দামের অজুহাতে ফের বাড়লো চালের দাম

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার বাজারে বেড়েছে চালের দাম। খুচরা ও পাইকারি বাজারে প্রায় সব রকম চালে কেজি প্রতি বেড়েছে দুই টাকা করে।

বিক্রেতারা বলছে, মোকাম থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে চাল, আর মিলারদের দাবি বেশি দামে ধান কিনতে হচ্ছে তাই খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে। যদিও কৃষকদের ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার ক্ষোভ আগের মতোই।

কুষ্টিয়ার খাজানগর মোকামের একাধিক মিল মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধানের দাম বাড়ার কারণে মাসখানেক আগে চিকন চালসহ অন্য চালের দাম কেজিতে এক থেকে দুই টাকা বেড়েছিল। এক মাসের ব্যবধানে গত কয়েকদিন ধরে খাজানগরের মোকামে মিনিকেট চাল কেজিতে এক টাকা ও মোটা সব ধরনের চাল কেজিতে দুই টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত ৩-৪ দিন কুষ্টিয়ার খুচরা বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে ২-৩ টাকা। চলতি আমন মৌসুমে এ নিয়ে দুই দফায় কুষ্টিয়ায় চালের দাম বাড়লো।

লিয়াকত রাইচ মিলের মালিক লিয়াকত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ধানের বাজার মণ প্রতি ৫০ টাকা বেড়েছে। তাই মিল গেট থেকেই চালের দাম বেড়েছে। বর্তমানে মিনিকেট ৪৭-৪৮ টাকা। কোথাও আরও বেশি। কাজললতা ৩৮ টাকা ও স্বর্ণা ২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ভাই ভাই রাইচ মিলের মালিক সুজন রহমান বাংলানিউজকে জানান, ধানের দাম বাড়লে চালের দাম বাড়বে। এক হাজার ১০০ টাকা বা সাড়ে ১১শ’ টাকা করে ধান কিনে সেটা মিলে আনতে ১ হাজার ২শ’ টাকা খরচ পড়ে। যা চালে ৫০ কেজির বস্তায় পড়তা পরে ২২শ’ টাকা। আমরা ২২শ’ টাকায় ঢাকায় পৌঁছে দিচ্ছি। আর ২৫ কেজির প্রতি বস্তা বিক্রি করছি টাকা ১২-১৩শ’ টাকা। আমরা সীমিত লাভে চাল বিক্রি করি।

কুষ্টিয়ার পৌর বাজারে দেখা যায়, কিছুদিন আগে স্বর্ণা চাল ২৮ টাকা কেজি, কাজললতা ৩৮ টাকা, মিনিকেট ৪৬ টাকা ও বাসমতি ৫১-৫২ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল সেটা এখন স্বর্ণা চাল ৩০ টাকা, কাজললতা ৪০ টাকা, মিনিকেট ৪৮ টাকা ও বাসমতি ৫৪-৫৫টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানান, বেশি দামে মোকাম থেকে চাল কিনতে হচ্ছে। তাই খুরচা বাজারে চালের দাম বেড়েছে। যে চাল কদিন আগে ২৮ টাকায় বিক্রি করেছি সেটা এখন ২৮ টাকায় কিনতে হচ্ছে মোকাম থেকেই।

চাল ক্রেতা শাহীন আলম বাংলানিউজকে জানান, চালের দাম কমার পরিবর্তে বাড়ছেই। ধানের দাম তো কম কিন্তু চালের দাম বেশি। এরমধ্যে চক্রের কারসাজি রয়েছে। দায়িত্বশীলরা হয়তো দেখেও দেখেন না। আর বাজারের ব্যবসায়ীরাও ইচ্ছে মতো দাম বাড়াচ্ছেন।

কৃষকদের দাবি, বর্তমানে বাজারে ধানের দাম ৬২০-৭৫০ টাকার মধ্যে। মোটা ধান ৬২০- ৬৮০ টাকা, আর চিকনটা ৬৮০-৭৫০ টাকা।

চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রধান বলেন, মোকামে চালের দাম ৭০-৮০ টাকা বেড়েছে। তাই আমাদের চালের দাম কেজি প্রতি দেড় থেকে দুই টাকা বাড়াতে হয়েছে।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন বাংলানিউজকে জানান, বিনা কারণে চালের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ধানের দাম বাড়ার অজুহাতে যদি কোনো মিল মালিক অতিরিক্ত লাভ করে থাকেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।