করোনা ভাইরাসের কারণে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে এ ভুতুড়ে অবস্থা তৈরি হয়েছে ঢাকার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র মতিঝিল এলাকার।

দেশের আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, অধিকাংশ সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, বীমার প্রধান কার্যালয়, পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ একচেঞ্জ কমিশন, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, ডিসিসিআইসহ বহু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

রাত পেরিয়ে সকাল হলেও এসব অফিসের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের কার্যালয় কর্মকর্তা, কর্মীদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠতো মতিঝিল। রাস্তার দু’পাশে বসতো অস্থায়ী বিভিন্ন ফল, চা, জামা-কাপড়ের দোকান। সন্ধ্যায় পর্যন্ত চলতো এসব প্রতিষ্ঠানের বেচাকেনা। সেই মতিঝিল এখন একেবারেই মানুষ শূন্য।

সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের কয়েকটি শাখা স্বল্প পরিসরে খোলা থাকলেও সেখানে গ্রাহকের উপস্থিতিও থাকে হাতে গোনা। ছোট-বড় সবধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ। তবে শাপলা চত্বর, বক চত্বর ও দৈনিক বাংলার মোড় এলাকায় ত্রাণের জন্য কিছু মানুষকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সংলগ্ন পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে রাজধানীর প্রধান বাণিজ্যিক এলাকার কার্যক্রম থমকে আছে। সরকারি-বেসরকারি অফিসের পাশাপাশি সবধরনের দোকানপাটও বন্ধ। প্রয়োজন না হলে কেউই বাসা থেকে বের হচ্ছে না।

সোমবার (২০ এপ্রিল) সকালে মতিঝিল এলাকাঘুরে ও দায়িত্বরত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণ ছুটির কারণে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় ফুটপাথের বহু মানুষের জীবিকা বন্ধ হয়ে গেছে। আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে তারা এখন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এরা সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেলেও অনেকেই আবার পাচ্ছেন না। ফলে সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অসহায় মানুষের অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

মতিঝিলের একটি ব্যাংকের নিরাপত্তা প্রহরী আনিসুর রহমান বলেন, অফিস, আদালত ও ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকায় মতিঝিলে মানুষের আগমন নেই। কিছু মানুষ জরুরি প্রয়োজনে ব্যাংকে এলেও যত দ্রুত সম্ভব কাজ সেরে বেরিয়ে পড়ছেন। সন্ধ্যার পরে এক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয় মতিঝিলে।

করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ায় সরকার গত ২৬ মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। চলবে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে ছুটির মেয়াদ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দীর্ঘদিনের ছুটির কারণে জনশূন্য মতিঝিল। ফুটপাথে যারা চায়ের দোকান, ফলের দোকান, খাবার বিক্রি করতেন তাদের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। সবাই নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছেন। সবকিছু মিলিয়ে রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকা এখন থমকে আছে। করোনা ভাইরাসের মহামারি কাটিয়ে ওঠার পর আবারও প্রাণ ফিরে পাবে মতিঝিল এটাই সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২০
এসই/আরবি/