রাজশাহী: খাদ্য তালিকায় ঘাস, খৈল, খড় থাকলেও নানা পদের ফলই প্রিয় শান্ত বাবুর। স্বভাবে শান্ত।
নিজের অনুপম সৌন্দর্য, ওজন ও আকৃতি নিয়ে এরই মধ্যে আলোচনায় উঠে এসেছে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার এ ষাঁড়। তবে কোরবানির বাজার ধরতে ষাঁড়টিকে এখনো হাটে ওঠানো না হলেও তাকে এক নজর দেখার জন্য বাড়িতেই ভিড় করছেন উৎসুক জনতা।
প্রায় ২৫ মণ ওজনের এ ষাঁড়ের দাম হাঁকা হচ্ছে ১২ লাখ টাকা, যদিও এখন পর্যন্ত সাত লাখই দাম উঠেছে। তবে শান্তর বিনিময়ে ১২ লাখ টাকাই নেবেন ষাঁড়টির মালিক আলিমুদ্দিন। চার-পাঁচ দিনের মধ্যে বাড়ি থেকে বিক্রি না হলে শান্তকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার কান্দ্রা গ্রামে শান্তর বসবাস। গ্রামের কৃষক আলিমুদ্দিন এ বিশালাকার ষাঁড়ের মালিক। পুরোদস্তুর এ কৃষকের বাড়ির খামারেই আদর-যত্নে বড় হয়ে উঠেছে সাদা-কালো রঙের এ ষাঁড়টি।
আলিমুদ্দিন জানান, ২০১৮ সালের এপ্রিলে তার বাড়ির দেশি গাভীই জন্ম দেয় শান্তকে। সেই থেকে ওর বিশেষ যত্নআত্তি শুরু। সরকারিভাবে দেশি গাভীতে কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতিতে সংকরায়নের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শান্ত এখন রাজশাহীর সবচেয়ে বড় ষাঁড়। এমনটাই দাবি করছেন আলিমুদ্দিন।
শান্তকে নিয়ে হইচই পড়ে গেছে গ্রামজুড়ে। তাকে এক নজর দেখতে প্রতিদিনই ওই বাড়িতে ভিড় করছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে ফোন করেও দরদাম করা হচ্ছে।
শান্তর খাবারের বিষয়ে জানতে চাইলে আলিমুদ্দিন জানান, তার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকে ১২ থেকে ১৪ কেজি সবুজ ঘাস, খড়, ভুট্টা ভাঙা, বিভিন্ন প্রকার ভুসি, সরিষার খৈল, ধানের কুড়া, লবণ, গাছের পাতা ও বিভিন্ন পদের দেশি ফল। তার খাবার বাবদই প্রতিদিন অন্তত ৮০০ টাকা খরচ হয়। আরও অন্য খরচ আছে তার পেছনে। তাকে মোটাতাজাকরণে এখন পর্যন্ত কোনো ওষুধ, ইনজেকশন বা রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়নি। শান্তকে সম্পূর্ণ দেশি খাবার খাইয়েই মাত্র ২৮ মাসে ২৫ মণ ওজনের করে তুলেছেন আলিমুদ্দিন।
জানা গেছে, এ বছর কোরবানির ঈদে শান্তকে বিক্রি করবেন তিনি। এ খবর জানার পর থেকেই এলাকার মানুষের উৎসাহ বেড়ে গেছে তাকে নিয়ে। প্রতিদিনই অনেকে আসছেন তাকে দেখতে। কেউ সেলফি তুলছেন, কেউ দাম হাঁকছেন। তবে ১২ লাখ টাকায়ই ষাঁড়টি বিক্রি করবেন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আলিমুদ্দিন।
পুঠিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন জানান, স্থানীয় কৃষক আলিমুদ্দিনের বিশালাকার ষাঁড় শান্তর কথা তিনি শুরু থেকেই জানেন। দেশীয় খাবার খাইয়েই প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করা হয়েছে তাকে। কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতিতে সংকরায়নের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে ফ্রিজিয়ান জাতের এ ষাঁড়। খামারির সঙ্গে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী দাম পেলে আলিমুদ্দিন ষাঁড়টি বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২০
এসএস/এফএম