ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চামড়া ব্যবসা: এখানেই উত্থান, এখানেই পতন

none | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০২০
চামড়া ব্যবসা: এখানেই উত্থান, এখানেই পতন বরিশালে চামড়া কেনায় অনীহা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।

বরিশাল: বরিশালে চামড়া কেনায় অনীহা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। এ কারণে মাঠপর্যায়ের চামড়া সংগ্রহকারীরা পড়েছেন বিপাকে।

এদিকে অর্থ সংকটে সাধ্যের বাইরে চামড়া সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

গত বছরের তুলনায় বরিশালে এখন পর্যন্ত তিনভাগের একভাগ পশুর চামড়া সংগ্রহ করেছেন ব্যবসায়ীরা। শেষ পর্যন্ত এ বছর চামড়া সংগ্রহ গত বছরের অর্ধেক হবে বলে জানায় ব্যবসায়ী সমিতি।

বরিশাল নগরের পদ্মাবতী এলাকার চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘ট্যানারি মালিকরা আমাদের ব্লক করে দিয়েছে। তাদের কাছে ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ, কোটি কোটি টাকা পাবে। আমরা পাবো আড়তদারদের কাছে, আড়তদাররা পাবে ট্যানারি মালিকদের কাছে। সেই টাকা না পেয়ে অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে বাড়িতে চলে গেছেন। ৫৪ জন ব্যবসায়ীর মধ্যে এবার মাত্র দুইজন চামড়া সংগ্রহ করছেন। ’

তিনি বলেন, ‘এ বছর সরকার সাড়ে ৫শ’ থেকে ৬শ’ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। সে ঋণ কাকে দিয়েছে কাকে দেয়নি, তা আমরা জানি না। কিন্তু ট্যানারি মালিকরা কেউ কেউ বলছে তাদের ঋণ দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে ট্যানারি মালিকরা আড়তদারদের পাঁচ হাজার থেকে সর্বোচ্চ এক লাখ পর্যন্ত খরচের টাকা দিয়েছে। ’

বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘কিন্তু আমরা এক কথায় কিছুই পাইনি। আমাদের ঢাকায় দেড় কোটি টাকা পাওনা, পেয়েছি এক লাখ। আর এ কারণে আমাদের পাঠ পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা বিশেষ করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ খারাপ অবস্থায় আছেন। তারাও আমাদের কাছে টাকা পাবে, বকেয়া রয়ে গেছে। তাগাদা দিলেও আমাদের কিছু করার নেই। ’

‘গত বছরও অনেক উদ্যোগ নিয়েছিলেন সরকার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। বরিশাল সদর উপজেলার চেয়ারম্যান তথ্য নিতে যেভাবে মাথা খারাপ করেছিলেন তাতে মনে করেছিলাম বকেয়া টাকা পাবো কিন্তু পাইনি। ’

বরিশালে চামড়া কেনায় অনীহা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। তিনি বলেন, ‘এ চামড়া ব্যবসা থেকেই আমাদের উত্থান হয়েছিল, আবার এখান থেকেই শেষ হতে বসেছি। ইতোমধ্যে দুটি বিল্ডিং বিক্রি করে ফেলেছি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চামড়া নগদ টাকায় সংগ্রহ করতে হয় আমাদের। তাছাড়া প্রতিটি গরুর চামড়া ঢাকায় পাঠানোর জন্য লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করতে তিনশ’ টাকা খরচ হয়ে যায়। কিন্তু আমরা চামড়া ঢাকায় পাঠানোর পর টাকা আটকে যাচ্ছে। ’

‘এসব কারণে কেউ চামড়া সংগ্রহ করতে রাজি নয়, সবাই নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু লোক আমাদের কাছে এসেছিলেন। তারা বলে গেছেন, আমরা যদি চামড়া সংগ্রহ করি, আর তারপর ঢাকায় কোনো অসুবিধা হয় তাহলে তাদের সঙ্গে যেন যোগাযোগ করি। কিন্তু তারা কী ব্যবস্থা করবেন তা তারাই জানেন। কীভাবে কোথায় পাঠাবো তা বলে যাননি। ঠিকানা দিয়ে গেছেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য। ’

বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘গত বছর বরিশালে আমরা ১৩ হাজার পিস পশুর চামড়া সংগ্রহ করেছি। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে এ বছর এখন পর্যন্ত ৪ হাজার পিসের মতো চামড়া সংগ্রহ করেছেন মাত্র দুজন ব্যবসায়ী। সর্বোচ্চ ছয় হাজার পিস চামড়া সংগ্রহ করা সম্ভব হতে পারে। বরিশাল বিভাগের চামড়া যা সংগ্রহ হয় তার সবই পদ্মাবতীতে আসে। ফলে গোটা বিভাগে বেশি পরিমাণে চামড়া সংগ্রহ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। তবে এবার কোরবানিও কম হয়েছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০২০
এমএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।