খুলনা: তিন বছর আগে শখের বসে কবুতর কিনে স্বাবলম্বী হয়েছেন খুলনার মোহাম্মদ নাসিম উদ্দিন শেখ। তিনি জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের টালিয়ামারা গ্রামের ইকরাম শেখের ছেলে।
শখের বসে কবুতর পালন শুরু করে সফলতা পেয়ে এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কবুতর পালন করছেন তিনি। তার দেখাদেখিতে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন শুরু করেছেন জেলাটিতে।
শুক্রবার (২১ আগস্ট) সকালে নাসিম বাংলানিউজকে বলেন, ছোটবেলা থেকে কম-বেশি কবুতর পালন করি। এরপর ২০১৭ সালে চার জোড়া কবুতর নিয়ে পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন শুরু করি। আলহামদুলিল্লাহ কবুতর পালন করে আমি সফল। এ কবুতরের ব্যবসা করে আমি নিজে স্বাবলম্বী হয়েছি এবং পুরো পরিবার চালাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমার খামারে বেশিরভাগ কবুতর দেশি ও গিরিবাজ। মূলত দামি কবুতর থেকে দেশি ও গিরিবাজ পালন করে বেশি লাভবান হওয়া যায়। কারণ এদের রোগব্যাধি কম হয় এবং বাচ্চার উৎপাদন খুব ভালো হয়। এদের বাচ্চাও সহজে বিক্রি করা যায়। দেশি জাতের কবুতর পালন করে কম পুঁজিতে বেশি লাভ করা যায়। যার কারণে দেশি জাতের কবুতরই আমি বেশি রাখি। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে আয় হয় ২০-২৫ হাজার টাকা। চাকরির চেয়ে বাড়িতে থেকে কবুতর পালন করে স্বাবলম্বী হয়ে আমি সন্তুষ্ট। তিনি আরও জানান, দেশি বিভিন্ন জাতের কবুতরের পাশাপাশি কিং, সিলভার, সিরাজি কালো, সিরাজি লাল, বোমবাই, ফিলিয়েজার, ইয়োলো, বাগদাদ হোমার, ইন্ডিয়ান লোটন, হোয়াট চায়না, আওল রেড বাগদাদ, ময়ূরীসহ অন্যান্য জাতের কবুতরও তিনি পালন করেছেন। বর্তমানে তার ২০ জাতের প্রায় তার ১০০ জোড়া কবুতর রয়েছে।
কবুতর কোথায় কোথায় বিক্রি করেন জানতে চাইলে নাসিম বলেন, খুলনার বৈকালী, লকপুর ও ফয়লার হাটে আমার কবুতর বিক্রি করা হয়।
নাসিম বলেন, কবুতরপ্রেমীদের কাছে আমার বেশ পরিচিতি রয়েছে। এছাড়া আমি স্মার্টফোনের মাধ্যমে কবুতরের ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করে দেন। এ কারণে বিভিন্নস্থান থেকে ক্রেতারা পছন্দের কবুতর ক্রয়ের জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এলাকাবাসীরা জানান, শত শত কবুতরের বাক-বাকুম ডাকে ও রং-বেরঙের কবুতর দেখে মুগ্ধ হন সবাই।
নাসিমের প্রতিবেশি সমাজকর্মী মিরাজ শেখ বলেন, চাকরি না করেও কবুতর পালন করে সফল হওয়া যায় তার উদাহরণ নাসিম। ক্ষুদ্র আকারে কবুতরের খামার করে সফল হওয়ার পর বড় খামার করার যে স্বপ্ন দেখেছেন তাতেও তিনি সফল। শখ বসে কবুতর পালন করে তিনি এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। নাসিমকে দেখে অনেকেই এখন বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২০
এমআরএম/আরআইএস