ঢাকা: দেশে শিগগিরই অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট পলিসি ২০২০ চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
তিনি বলেন, এ নীতির আলোকে অটোমোবাইল শিল্পখাতে জাপানের কারিগরি সহায়তা দেওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত হবে।
সোমবার (৩১ আগস্ট) শিল্প মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো-এর সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
এসময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগসহ শিল্প মন্ত্রণালয় ও জাপান দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের নিজস্ব ব্র্যান্ডের মোটরগাড়ি উৎপাদন করতে শিল্প মন্ত্রণালয় কাজ করছে। জাপানের মিটসুবিশি করপোরেশনের কারিগরি সহায়তায় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এ মোটরগাড়ি উৎপাদন করবে।
জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও শিল্পায়নে জাপানের উদ্যোক্তারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিসিআইসির সার কারখানাগুলোতে জাপান দীর্ঘদিন ধরে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে আসছে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা নির্মাণেও জাপানের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোর আধুনিকায়ন, কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানা স্থাপন, কৃষিপণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, হালকা প্রকৌশল শিল্পের উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ভেন্ডার উন্নয়নে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে জাপানের রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহিত দূরদর্শী পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে। জাপানের মিটসুবিশি করপোরেশনসহ অন্যান্য অটোমোবাইল শিল্প উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী। তিনি বাংলাদেশের নিজস্ব ব্র্যান্ডের মোটরগাড়ি উৎপাদনে জাপান কারিগরি সহযোগিতা দেবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বাংলাদেশে মোটরসাইকেল শিল্পের বিকাশে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি যৌক্তিক পরিমাণে নির্ধারণ করা প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলের আধুনিকায়ন ও চিনি শিল্পে পণ্য বৈচিত্রকরণে শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলেও জানান তিনি।
নাওকি ইতো বলেন, বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ বাড়াতে দ্বিপাক্ষিক সংলাপ জোরদার করতে হবে। এর মাধ্যমে বিনিয়োগের জন্য উদীয়মান খাতগুলো চিহ্নিত করতে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। জাপানের বিনিয়োগ বাড়াতে কর প্রণোদনা, পর্যাপ্ত ভূমি বরাদ্দসহ অন্যান্য সুযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন। এছাড়া অটোমোবাইল শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পখাতের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। একইসঙ্গে মোটরসাইকেলের সার্টিফিকেশনের জন্য অটোমোবাইল টেস্টিং অ্যান্ড রিসার্স ইনস্টিটিউট স্থাপনে জাপান প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে বলে এসময় তিনি উল্লেখ করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের শিল্পখাতের জাপানি বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়। এসময় বাংলাদেশে নিজস্ব ব্র্যান্ডের মোটরগাড়ি উৎপাদন, জাতীয় শিল্পনীতি ২০২১ প্রণয়ন ও শিল্প ডাটাবেজ তৈরিতে জাপানের কারিগরি সহায়তা, মোটরসাইকেল শিল্পের আধুনিকায়ন, বাংলাদেশে অটোমোবাইল ও হালকা প্রকৌশল শিল্প সংশ্লিষ্ট ভেন্ডর ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়ন, মোটরসাইকেলের সার্টিফিকেশনের জন্য অটোমোবাইল টেস্টিং অ্যান্ড রিসার্স ইনস্টিটিউট স্থাপন এবং শিল্প বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে কারিগরি সহযোগিতাসহ দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় আলোচনায় স্থান পায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২০
জিসিজি/আরবি/