খুলনা: দেশের প্রথম সারির কুরিয়ার, যাদের প্রায় সব জেলায় সেবা দিয়ে থাকে, এমন কুরিয়ার সার্ভিসগুলো অহেতুক বাড়তি চার্জ করছে। করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষ যখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনলাইনে কেনাকাটা শুরু করেছে, সেই সুযোগে কুরিয়ার সার্ভিসগুলো ইচ্ছা মতো তাদের রেট বাড়িয়ে দিয়েছে।
খুলনার ‘খাসা-অর্গানিক’ পণ্যের স্বত্বাধিকারী ও ‘আমরা তরুণ’ উদ্যোক্তা গ্রুপে অ্যাডমিন হেলাল হোসেন বলেন, ‘এখন কুরিয়ারে একটি পিন পাঠাতেও ১০০ টাকা চার্জ দিতে হয়। সুন্দরবন, এস এ পরিবহন, কন্টিনেন্টালসহ বেশ কিছু কুরিয়ার মধু, তেল ও অনেক পণ্য নেয় না। তাদের কোনো সিটিজেন চার্টার নেই। পণ্য দেখে ইচ্ছা মতো রেট নির্ধারণ করে। অনেক সময় কুরিয়ারে পণ্য খেয়ে ফেলা, প্যাকেট খুলে পণ্য চুরির ঘটনাও ঘটছে। সরকারি ডাক বিভাগ যদি সব পণ্য পরিবহণ করতো, তাহলে আমাদের সুবিধা হতো। আমরা সহনীয় চার্জে নিরাপত্তার সঙ্গে পণ্য পরিবহনের নিয়শ্চতা চাই। ’
‘শাইনিং গার্লস’ গ্রুপের অ্যাডমিন তরুণ উদ্যোক্তা নুজহাত ই রাইসা বলেন, ‘আমি মেয়েদের ড্রেস, কসমেটিকস, ব্যাগ এবং অর্নামেন্টস বিক্রি করি। সারা দেশে আমার কাস্টমার রয়েছে। তাদের ৫০ টাকার পণ্য পৌঁছাতে ১০০ টাকার ওপর চার্জ দিতে হয়, যার কারণে অনলাইনে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ’
খাঁটি পণ্যের স্বত্বাধিকারী সোহাগ সরকার বলেন, ‘আমার অনলাইন ব্যবসার বেশিরভাগ কাস্টমার ঢাকার। আমি তাদের কাছে সহনীয় চার্জে পণ্য পাঠাতে পারছি না। যে পণ্যের দাম ১০০ টাকা, সে পণ্য কুরিয়ারে ঢাকা পাঠাতে ১২০ টাকা চার্জ চায়, তাহলে কাস্টমার আমার পণ্য নেবে কেন? আমি কুরিয়ার চার্জ কমানোর অনুরোধ করছি। ’
ময়মনসিংহ থেকে কৃষিবিদ সাকিন বলেন, আমরা কয়েকজন তরুণ নিরাপদ খাদ্য নিয়ে কাজ করছি। ভেজালের যুগে মানুষের দরজায় নিরাপদ খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই আমাদের ‘কৃষি মার্ট’ এর ব্যান্ড ‘কৃষি’ যাত্রা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে মানুষের আস্থার জায়গাটি অর্জন করতে পেরেছি। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, আমরা যারা প্রান্তিক পর্যায় থেকে কৃষি নিয়ে কাজ করি, আমাদের বেশির ভাগ ভোক্তা হচ্ছেন ঢাকা, চট্রগ্রামসহ অন্য বিভাগীয় শহরে। সেক্ষেত্রে কুরিয়ারে ১০০ টাকার একটি পণ্য পাঠাতে প্রয়োজন ১২০ টাকা, যা অসহনীয়। এতে করে ভোক্তা ধরে রাখা অনেক কঠিন হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় যথাযথ কর্তপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন এ সংকট সমাধান করে স্বপ্নবাজ তরুণদের চলার পথ মসৃণ ও সুগম করা হয়। ’
খুলনামার্টের (khulnamart.com.bd) প্রতিষ্ঠাতা স্বপ্নীল মাহফুজ বাংলানিউজকে বলেন, ‘সুন্দরবন কুরিয়ারের সার্ভিস খুব বাজে। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কন্টিনেন্টাল কুরিয়ারে ৮শ’ টাকার এক কেজি মধু পাঠাতে ২শ’ টাকা দিতে হয়। ক্ষেত্র বিশেষে ২৫০ টাকাও দাবি করেস, যা খুবই অমানবিক। ’
ভোক্তা অধিকার খুলনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শিকদার শাহীনুর আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘন হয় এমন কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩ , ২০২০
এমআরএম/এফএম