ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

স্থানীয় অটোমোবাইল খাতে প্রচুর কর্মসংস্থান হতে পারে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২১
স্থানীয় অটোমোবাইল খাতে প্রচুর কর্মসংস্থান হতে পারে

ঢাকা: স্থানীয় অটোমোবাইল খাতে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে, যা অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এজন্য বাংলাদেশ সরকারকে একটি যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন, বিনিয়োগ প্রণোদনা ও ট্যাক্স সহায়তা দেওয়া, স্থানীয় উৎপাদানকারীদের সক্ষমতা বাড়ানো এবং স্থানীয় চাহিদা বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন সংশ্লিষ্টরা।

রোববার (১৮ এপ্রিল) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘অটোমোবাইল শিল্পের উন্নয়ন: বর্তমান বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা একথা বলেন। ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। সম্মানিত অতিথি হিসবে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নায়োকি। ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান।

বক্তারা বলেন, দেশের অর্থনীতির গতিধারা বজায় রাখতে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে তথ্য-প্রযুক্তি ও অটোমোবাইল খাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। এজন্য গাড়ি নির্মাণে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ তৈরিতে স্থানীয় শিল্পের বিকাশে যৌথ বিনিয়োগ উৎসাহিতকরণ, কমপক্ষে ৫-১০ বছর মেয়াদী সহায়ক শুল্ক নীতিমালা, প্রবাসী বাংলাদেশিদের এখাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য ৫ বছরের কর অব্যাহতি প্রয়োজন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী বলেন, শিল্পায়নের মাধ্যমে একটি দেশের তার উন্নয়নের সর্বোচ্চ বা বৃহত্তর পর্যায়ে যায়, আমাদের সরকার সেই লক্ষ্যে দেশের শিল্পায়ন ও শিল্পের বিকাশের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।  

তিনি বলেন, করোনা মহামারি ধাক্কা বাংলাদেশ অর্থনীতিতে লাগলেও গত বছরে জিডিপি ৫ দশমিক ২৪ শতাংশে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। করোনা মহামারি দ্বিতীয় ঢেউ চলছে, দেশে লকডাউনের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশেষ ব্যবস্থায় শিল্প কলকারখানা চালু রাখছি। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্যেমাত্রায় পৌঁছানোর এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হতে সর্বাক্ষণিক শিল্প কারখানার চালু রাখার কোনো বিকল্প নেই।

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নায়োকি বলেন, অনেক দেশের শিল্পায়নে অটোমোবাইল খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, বিশেষ করে জাপানে এখাত দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে অটোমোবাইল শিল্প উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের সেই উদাহরণ অনুসরণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।  

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের অটোমোবইল খাতের বিকাশ ত্বরান্বিত করতে হালকা প্রকৌশল শিল্পকে এগিয়ে আসতে হবে। এজন্য জাপানের গাড়ি নিমার্তা প্রতিষ্ঠান মিতসুবিশি বাংলাদেশে সিকেডিপ্ল্যান্ট স্থাপনের আগ্রহ দেখিয়েছে এবং সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া চলমান।

ওয়েবিনারের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, কোভিড পূর্ববর্তী সময়ে দেশের এ শিল্পখাত প্রতিবছর গড়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশহারে বাড়লেও, বিআরটিএর তথ্যমতে ২০২০ সালে বাংলাদেশে মোটর ভেহিক্যালের নিবন্ধন কমেছে প্রায় ২৪ শতাংশ।  

মূল প্রবন্ধে ইফাদ গ্রুপ অব বাংলাদেশের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন আহমেদ বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ অবকাঠামো খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। বিশেষ করে পদ্মাসেতু পুরোদমে চালু হলে স্থানীয় পর্যায়ে বাণিজ্যিক যানবাহনের চাহিদা বাড়বে।

বারভিডা সভাপতি আব্দুল হক বলেন, অটোমোবাইল খাতের বিকাশে আমাদের নিজস্ব বাজার তৈরিই বড় চ্যালেঞ্জ এবং নিজস্ব বাজার সম্প্রসারণে সরকারকে সহায়তার পাশাপাশি শিল্প মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

এতে অন্যদের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক ইউনিটের প্রধান জন ডি. ডানহাম, প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌহিদুজ্জামান, উত্তরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউর রহমান, বারভিডার প্রেসিডেন্ট আব্দুল হক, সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ ও জাইকা প্রতিনিধি হায়াকাহ ইউকো বক্তব্য রাখেন।

ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এনকেএ মবিন, এফসিএস, এফসিএ ধন্যবাদ জানান। ডিসিসিআই সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেনসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা ওয়েবিনারে যোগ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২১
জিসিজি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।