টাঙ্গাইল: তৃতীয় দফায় বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ায় এ ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাই প্রতারণার মাধ্যমে দ্বিগুন লাভবান হচ্ছেন। একইসঙ্গে সাধারণ ক্রেতারা হচ্ছেন প্রতারিত।
এদিকে দাম বাড়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা আগের মজুদকৃত বোতলজাত সয়াবিন তেল এখন ড্রামে ঢেলে খোলাভাবে বিক্রি করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। আবার ড্রামে ঢালা তেলের বোতলগুলোও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।
অপরদিকে তেলের দাম বাড়ার আগে থেকেই বড় বড় ব্যবসায়ীরা বাজারগুলোতে তেল দেওয়া বন্ধ করে দেন। এতে করে সাধারণ মানুষও বিপাকে পড়ে যান তেল কিনতে না পেরে। তাই বেশি দাম দিয়েই তেল কিনতে হয়েছে তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টাঙ্গাইলে বেশ কয়েকজন সয়াবিন তেলের বড় ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি শক্তিশালি সিন্ডিকেট তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়আনি বাজারের ছানোয়ার হোসেন, দুলাল সাহা ও শংকর অন্যতম। তেলের দাম বাড়ার আগে থেকেই বাজারের বিভিন্ন দোকানে তেল দেওয়া বন্ধ করে দেন এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা। পরবর্তীতে দাম বাড়ার ঘোষণা আসার পরপরই সিন্ডিকেটের সদস্যরা আগের দামে কেনা বোতলজাত সয়াবিন তেল ড্রামে ভরে খোলাভাবে ছয়আনি বাজার, পার্ক বাজার ও বটতলা বাজারসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে সাপ্লাই দেওয়া শুরু করেন। আবার বোতলের গায়ে লাগানো লেবেল তুলেও বিক্রি করতে দেখা গেছে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে। তারা জানিয়েছেন, তেলগুলো আগের কেনা। তাই বর্তমানে দাম বাড়ায় লেবেল তুলে তারা বিক্রি করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পার্ক বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, তেল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সদস্যদের রয়েছে বড়বড় গোডাউন। আর সেই গোডাউনেই দাম বাড়ার আগেই তেল মজুদ করে রাখা হয়েছিল। এখন সেই বোতলজাত তেল ড্রামে ভরে খোলাভাবে বিক্রি করা হচ্ছে। আর এই খোলা সয়াবিন তেল তারা বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ১৮৫ টাকা এবং বোতলজাত সয়াবিন ১৮০ টাকা দরে।
মতিয়ার রহমান নামে এক ক্রেতা জানান, তিনি এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন কিনেছেন ১৮০ টাকা দিয়ে। কিন্তু বোতলের গায়ে কোনো লেবেল না থাকায় তিনি মনে করছেন এটি আগের কেনা তেল।
ছয়আনি বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, দাম বাড়ার আগে থেকেই তাদের তেল দেওয়া বন্ধ করে দেন সিন্ডিকেটের সদস্যরা। পরবর্তীতে দাম বাড়লে বোতলের তেল ঢেলে ড্রামে ভরে বিক্রি করছেন। এ কারণে বাজারগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই বললেই চলে। আর যেগুলো আছে তাও আবার লেবেল ছাড়া।
আকুরটাকুর পাড়ার তোফাজ্জল হোসেন নামে এক ক্রেতা জানান, সকালে তিনি পার্ক বাজারে যান তেল কিনতে। কিন্তু বোতলজাত তেল না থাকায় খোলা সয়াবিন তেল কিনে নেন ১৮৫ টাকা কেজি দরে।
আব্দুর রহমান নামের আরেক ক্রেতা জানান, তিনি বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে গিয়ে দেখেন বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। পরে বাধ্য হয়ে খোলা তেল কিনতে হয়েছে। তবে বোতল না থাকায় ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১৫ টাকা দিয়ে একটি বোতল কিনে সেটিতে তেল কিনে নিয়ে যান তিনি।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বাংলানিউজকে জানান, দু-একদিনের মধ্যেই বাজারগুলোতে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখতে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, মার্চ ০৫,২০২২
আরএ