ঢাকা: বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের ২য় শীর্ষ রপ্তানিকারক হলেও মূলত তুলনামূলক কম দামের পোশাক বিক্রি করে বাংলাদেশ। এ অবস্থার উন্নয়নে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র শিল্প মালিকদের বিনিয়োগে বৈচিত্র আনার আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
শনিবার (০৫ মার্চ) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আরএমজি, নিটওয়্যার, সোয়েটার বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, বেশিরভাগ উদ্যোক্তারা কটনবেজড পোশাকের কারখানা এবং স্পিনিংয়ে বিনিয়োগে আগ্রহী। কিন্তু এখন বিশ্ববাজারে কৃত্তিম ফাইবারের পোশাকের চাহিদা বাড়ছে এবং দামও বেশি। তাই তৈরি পোশাক ও বস্ত্রখাতের উদ্যোক্তাদের ম্যান মেড ফাইবার খাতে বিনিয়োগের করতে হবে।
তিনি বলেন, পোশাক উৎপাদনে দীর্ঘদিন ধরে কম দামে গ্যাস-বিদ্যুতের সুবিধা পেয়ে আসছিল। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে এ সুবিধা কমে যাচ্ছে। তুলনামূলক স্স্তা শ্রমের সুবিধাও এখন আর নেই। অন্যদিকে এ শিল্পের কাঁচামালের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। তাই এ শিল্পে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে, এখন উচ্চমূল্যের পোশাক রপ্তানিতে মনোযোগ দিতে হবে।
বাংলাদেশকে নতুনভাবে ব্র্যান্ডিং করার জন্যও উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, রপ্তানিমুখী শিল্পের বাইরে থাকা কারখানাগুলোকে নিরাপদ করতে এফবিসিসিআইতে সেফটি কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে। দেশের সব শিল্প কারখানাকে নিরাপদ করতে বিডার সঙ্গে একযোগে কাজ করছে সেফটি কাউন্সিল।
কমিটির চেয়ারম্যান ও বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, বিশ্ববাজারে কোন কোন পণ্যের চাহিদা বাড়ছে এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের কোন কোন খাতে বিনিয়োগ সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে সেসব বিষয়ে একটি গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, রপ্তানিকারকরা নিজেরা প্রতিযোগিতা করে অনেক সময় পণ্যের দাম কমিয়ে দিচ্ছেন। এ প্রতিযোগিতা বন্ধের আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি।
এ সময় পোশাক শিল্পের নানা সমস্যা সমাধানে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে ব্যাংক ও আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, অর্থ মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয় ভিত্তিক উপ-কমিটি করার প্রস্তাব দেন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
সভায় উপস্থিত কমিটির সদস্যরা বলেন, তৈরি পোশাক খাতে কাস্টম ও বন্ড কমিশনারেটের হয়রানি এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা। বিভিন্ন কাঁচামাল আমদানিতে এইচএস কোড জনিত জটিলতার কারণেও ব্যবসায়ীরা বাধার মুখে পড়ছেন। বর্জ্য পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করে ব্যবহারের ক্ষেত্রেও আইনের সংশোধন দরকার বলে মনে করেন উদ্যোক্তারা।
সভায় এফবিসিসিআই’র পরিচালক ও স্থলবন্দর বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর-ইন চার্জ বিজয় কুমার কেজরিওয়াল বলেন, পোশাক খাতের স্থলবন্দর কেন্দ্রিক যেকোন সমস্যা সমাধানে তার কমিটি সর্বোচ্চ সহায়তা করবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক হারুন অর রশীদ, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ-আল-মাহমুদ মাহিন, ইন্তেখাবুল হামিদ অপু, শামস মাহমুদ, ফজলে শামীম এহসান, মোহাম্মেদ কামাল উদ্দীন, অঞ্জন শেখর দাস, হুমায়ুন কবির সেলিমসহ অন্যান্য সদস্যরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২২
এসই/আরআইএস