ঢাকা, রবিবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ জুন ২০২৪, ২২ জিলহজ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

গ্রাহকের ৩০ হাজার ডাটা মুছে ফেলেছে ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২২
গ্রাহকের ৩০ হাজার ডাটা মুছে ফেলেছে ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স

ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স কম্পানি লিমিটেডের ডাটাবেইস থেকে প্রায় ৩০ হাজার ডাটা মুছে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোম্পানির চলমান অডিট কার্যক্রম ব্যাহত করার জন্য আইটি বিভাগ গণগ্রামীণ বিভাগের কালেকশন টেবিল, মানি রিসিট, প্রিমিয়াম রিসিট সংক্রান্ত প্রচুর পরিমাণ ডাটা মুছে ফেলে।

অডিটরের তরফে বলা হয়েছে, ডাটা ডিলিটের ঘটনা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ। কম্পানির অভ্যন্তরীণ অডিট রিপোর্টেও ডাটা ডিলিটের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) নিয়োগ করা অডিট ফার্ম একনাবিন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্সে নিরীক্ষা চালায়। অডিট ফার্ম অডিট কার্যক্রম পরিচালনাকালে ২০২১ সালের ২৭, ২৮ ও ৩১ অক্টোবরের চিঠিসহ বেশ কিছু চিঠি ডেল্টার আইটি ইনচার্জ কাজী এহতেশাম ফয়সালের কাছে গণগ্রামীণ বীমা বিভাগের ডাটাবেইসের তথ্য চেয়ে রিকুইজিশন দেয়। পরবর্তীতে কাজী এহতেশাম ফয়সাল ও শেখ মহসিন রেজার (এভিপি, আইটি) বিরুদ্ধে বীমা পলিসি গ্রাহকদের ডাটা ডিলিট সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়া যায়।

একনাবিনের ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর ও ৩০ ডিসেম্বরের অডিট রিপোর্টে ডাটা ডিলিটসহ কম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুরুর রহমান, তাঁর ছেলে সাসপেন্ডেড পরিচালক জিয়াদ রহমান এবং তাঁর মেয়ে সাবেক সিইও আদিবা রহমানসহ বেশ কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তিন হাজার ৬৮৭ কোটি টাকার অর্থ আত্মসাতের এবং দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। চলমান অডিটের কার্যক্রম ব্যাহত করার উদ্দেশ্যেই আইটি বিভাগ থেকে ডাটা ডিলিট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইডিআরএর চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গ্রাহকের আমানতের তথ্য ডিলিট করা গর্হিত অপরাধ। এতে পলিসিহোল্ডারের স্বার্থ এমনকি সরকারের স্বার্থও বিঘ্নিত হয়েছে। কারণ এই কম্পানিতে সরকারের পৌনে চার শ কোটি টাকা রাজস্ব বকেয়া রয়েছে। এই বিষয়ে দুদক তদন্ত করছে। ’

উল্লেখ্য, ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স কম্পানি লিমিটেডের সাসপেন্ডেড পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক সংঘটিত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে আইডিআরএ’র তৎকালীন চেয়ারম্যান ড. শফিকুর রহমান পাটোয়ারীর নির্দেশে মেসার্স ফেমস অ্যান্ড আর এবং মেসার্স হাওলাদার অ্যান্ড ইউনুস চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ফার্ম পরিচালিত অডিট রিপোর্টে যথাক্রমে ২৫টি ও ২২টি অডিট আপত্তি প্রকাশিত হয়। আইডিআরএ ডেল্টা লাইফের তৎকালীন বোর্ড থেকে কোনো ধরনের জবাব না পেয়ে বাধ্য হয়ে ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বীমা পলিসি গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষার্থে বীমা আইন, ২০১০-এর ৯৫ ধারা অনুযায়ী ওই কম্পানির পরিচালন পর্ষদকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রশাসক নিয়োগ করে। পাশাপাশি প্রশাসককে অডিট কার্যক্রম সম্পন্ন করার মাধ্যমে অডিট রিপোর্ট প্রাপ্তি সাপেক্ষে বীমা আইন, ২০১০-এর ৯৬ ধারায় একটি রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সাবেক পরিচালনা পর্ষদ বরখাস্ত হলেও তাদের নির্দেশে কম্পানির কিছু অসাধু কর্মচারী অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য নিরলসভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্সের নির্বাহী পরিচালক ড. আশরাফ উদ্দীনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২২
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।