সুনামগঞ্জ: মাছ চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন সুনামগঞ্জ পৌর শহরের উত্তর আরপিননগর এলাকার লেইচ নূর মিয়া। পরিবার পরিজন নিয়ে থাকবেন সুখে শান্তিতে।
সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে লেইচ নূর মিয়ার সেই সোনালী স্বপ্ন। ভেসে গেছে তার সব পুকুরের মাছ। কীভাবে এখন দেনা শোধ করবেন, সে চিন্তায় লেইচ নূর মিয়া দিশেহারা।
তিনি জানান, ঋণ নিয়ে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কুরবান নগর ইউনিয়নে মনরপুর গ্রামে দুটি পুকুরে ৪০ লাখ টাকার মাছ ও সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পশ্চিম হাজীপাড়ার একটি পুকুরে পাঁচ লাখ টাকার রুই, কাতল, কারফু, ঘ্রাস কার্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছেড়েছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন, মাছগুলো বড় হওয়ার পর বিক্রি করলে ঋণ শোধ করেও ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা লাভ করবেন। কিন্তু তার চোখের সামনেই বানের জলে ভেসে গেছে সব স্বপ্ন। এর আগে ২০২০ সালের বন্যায়ও লেইচ নুর মিয়ার তিনটি পুকুর থেকে ৩০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গিয়েছিল। যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবার আরও বেশি বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষি লেইচ নূর মিয়া কান্না জড়িত কণ্ঠে বাংলানিউজকে জানান, আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেলাম। অনেক আশা নিয়ে তিনটি পুকুরে ৪৫ লাখ টাকার মাছ চাষ করেছিলাম। ভেবেছিলাম, মাছ বিক্রি করতে পারলে গতবারের ঋণসহ এবারের ঋণও শোধ করে কিছুটা লাভবান হব। কিন্তু বন্যার পানি আমার সব মাছ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে আমাকেও নিঃস্ব করে গেছে।
এখন আমি এত মানুষের ঋণ কীভাবে শোধ করব, সেই চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছি।
লেইচ নুর মিয়ার ব্যবসায়িক অংশীদার সোহেল মিয়া বলেন, আমরা একসঙ্গে ১০ একর পুকুরে ৪৫ লাখ টাকার মাছ চাষ করেছিলাম। বানের পানিতে সব মাছ ভেসে গেছে। এখন চিন্তায় আছি, কয়েকটি দোকান থেকে মাছের খাদ্য বাকি এনেছিলাম, তা কীভাবে পরিশোধ করব আর মাছ কেনার জন্য যে ঋণ করেছিলাম, তাই বা কীভাবে শোধ করব। চিন্তায় আমাদের নওয়া-খাওয়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম, ঘুমও আসে না।
সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুনীল মণ্ডল বাংলানিউজকে জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিদের তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তারা যাতে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, সরকার সেই ব্যবস্থা করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২২
এসআই