ঢাকা: তৃতীয় দেশের মধ্য দিয়ে ভুটানের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ চালুর ফলে উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পর্যটন খাতে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ভুটানসহ প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আকাশ পথে যোগাযোগ স্থাপন করতে দেশের সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর অফিস কক্ষে বাংলাদেশ-ভুটান সচিব পর্যায়ের ৮ম সভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে আগত ভুটানের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব দেব দাশো কর্মা শেরিনের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করতে আসে। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) নূর মো. মাহবুবুল হকসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সৈয়দপুর আঞ্চলিক বিমানবন্দর এবং বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারি স্থলবন্দর দিয়ে বাণিজ্য ও যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ উভয় দেশের জন্য লাভজনক হবে। বাংলাদেশে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বিষয়ে পড়ালেখার সুযোগ নিতে পারে ভুটান। বাংলাদেশে এ বিষয়ে উন্নতমানের শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। বাংলাদেশ-ভুটান বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে উভয় দেশের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।
টিপু মুনশি বলেন, ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভুটান অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। বিগত ১ জুলাই উভয় দেশ প্রয়োজনীয় এসআরও জারি করেছে। এ চুক্তির ফলে ভুটানের ৩৪টি পণ্য বাংলাদেশের বাজারে এবং বাংলাদেশের ১০০টি পণ্য ভুটানের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে। এর ফলে উভয় দেশের মধ্যে প্রত্যাশিদ হারে বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে।
গত ১৩-১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বাংলাদেশ-ভুটান সচিব পর্যায়ের ৮ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশ পক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ নেতৃত্ব দেন। ভুটানের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব দেব দাশো কর্মা শেরিন ভুটানের পক্ষে নেতৃত্ব দেন।
সভায় ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়ন জোরদার করতে বাংলাদেশ-ভুটান ট্রানজিট অ্যাগ্রিমেন্ট এবং প্রটোকল চূড়ান্তকরণ, বাংলাদেশ-ভুটান অ্যাগ্রিমেন্ট এবং প্রটোকলের বাস্তবায়ন সংক্রান্ত আলোচনা, বিশেষ করে তৃতীয় দেশের মধ্য দিয়ে যোগাযোগ সহযোগিতা এবং বাণিজ্য সহজীকরণ সংশ্লিষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ও বিভিন্ন আঞ্চলিক ফোরামে পারস্পরিক সমর্থন, পর্যটন শিল্পের বিকাশে উভয় দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, কৃষি এবং শিল্প খাতে উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগ যথাক্রমে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই), ভুটান স্ট্যান্ডার্ড ব্যুরো, ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচার এক্সটেনশন, ভুটান অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড রেগুলারেটি অথরিটির মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, বাণিজ্য ক্ষেত্রে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূরীকরণে উভয় দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা এবং ভুটান থেখে পাথর আমদানি এবং সোনাহাট শুল্কবন্দরের মাধ্যমে ভুটানের পণ্য পরিবহণ নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিষয়গুলো নিয়ে উভয় দেশ আন্তরিকতার সঙ্গে পদক্ষেপ নেবে। সচিব পর্যায়ের ৯ম সভা ভুটানে অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২
জিসিজি/এমজেএফ