বরিশাল: কোটা বাতিলের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন।
বুধবার (৩ জুলাই) শিক্ষার্থীদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণে অনেকটাই জোরাল হয়েছে আন্দোলন কর্মসূচি।
এ সময় শিক্ষার্থীদের কাফন পরে মহাসড়কে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাইনুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের মো. মিরাজ হোসেন, নাইমুর রহমান, কাইউম, ইংরেজি বিভাগের তামিম ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অপর্ণা আক্তার।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (৩ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে তারা সড়ক অবরোধ করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা সড়কে অবস্থান শেষে দুপুর ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়। তবে চারদফা দাবিসহ কোটা বাতিলের দাবি আদায় না হলে লাগাতার আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভূমিকা সরকার বলেন, কোনো বৈষম্যহীন রাষ্ট্রে ৫৬ শতাংশ কোটা থাকতে পারে না। তীব্র আন্দোলনের মুখে সরকার যেখানে কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছিল হাইকোর্ট কেন সেই কোটাকে আবার পুনর্বহাল করল আমরা জানি না। আমি নিজে মেয়ে হয়েও বলছি, আমাদের মেয়েদের জন্য আলাদা কোটার প্রয়োজন নেই। নারী পুরুষ আমরা সবাই সমান। কোটা বাতিল হোক এটাই আমাদের চাওয়া।
অপর শিক্ষার্থী সেঁজুতি বলেন, আমরা কোটা চাই না। অবিলম্বে এর বাতিল চাই। আশা করি কোটা বাতিল করে আদালত রায় প্রদান করবেন। যদি তা বাতিল না হয়, তাহলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তামিম ইকবাল বলেন, ২০১৮ সালের রক্তের দাগ আজও শুকায়নি। আমাদের সেই সংগ্রাম ব্যর্থ হওয়ার পথে। কাফন পরে রাস্তায় নেমেছি। কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।
এদিকে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধের কারণে বরিশাল নগর ও খয়রাবাদ সেতু প্রান্তে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা এবং ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় চলাচলকারী যানবাহনের চালক-হেলপারসহ যাত্রীদের পড়তে হয় ভোগান্তিতে। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি প্রয়োজনের যানবাহনের চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
এদিকে গণপরিবহনে অনেকেই দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে পায়ে হেটে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন।
ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার উদ্দেশে রওনা দেওয়া মো. পারভেজ জানান, দীর্ঘ সাড়ে ৩ ঘণ্টার বেশি সময় জার্নি করে এখানে এসে দুই ঘণ্টা ধরে আটকা আছি। এতে শুধু আমার না গোটা পরিবহনের সবার ভোগান্তি হচ্ছে। যারা কাছের যাত্রী ছিলেন তারা তো নেমে হেঁটে সামনে চলে গেছেন। আমার পক্ষে তাও সম্ভব হচ্ছে না।
নলছিটি থেকে বরিশালগামী বাসের যাত্রী আ. ছাত্তার বলেন, দাবি আদায়ে আন্দোলন করতে হয়, এটা গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু আন্দোলনের নামে কথায় কথায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে আমাদের ভোগান্তির শেষ থাকে না। এক কথায় তাদের হাতে বিভাগের পাঁচ জেলার মানুষ আমরা জিম্মি।
তিনি বলেন, তাদের আন্দোলনও চলুক, তবে সেটা সাধারণ মানুষের চলাচলের পথ আটকে নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০২৪
এমএস/জেএইচ