খুলনা: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) নবনিযুক্ত ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদ বলেন, চ্যালেঞ্জ আমার কাছে কোনো বিষয় নয়, আমি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করব। কারণ আমি এ প্রতিষ্ঠানকে ভালোবাসি।
কুয়েটের ভিসি সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে খুলনার ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইনের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, চ্যালেঞ্জ আমার কাছে কোনো বিষয় নয়। কারণ আমার কাছে কখনো ফ্যামিলি থাকতো না। এখনো থাকে না। আমি সব সময় একাই থাকতাম। সুতরাং সময় আমার কাছে কোনো ব্যাপার নয়। আমি ভোর ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করতে পারি। সুতরাং কাজ এবং চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমার কাছে কোনো সমস্যা নেই।
ভিসি হিসেবে যোগদান পর এটাই সাংবাদিকদের সঙ্গে তার প্রথম মতবিনিময় সভা। ভিসি বলেন, আমি ফার্স্ট যখন কুয়েটে তখন ছিল বিআইটি ভর্তি হতে আসি। আমার পা একটু সমস্যার কারণে মেডিকেল বোর্ড আমাকে বলে আমি ভর্তি হতে পারবে না। আমাকে ফারদার আরও কিছু এক্সাম দিতে হবে। সুতরাং প্রথম দিন থেকেই আমার জন্য ছিল চ্যালেঞ্জ। ফারদার কিছু এক্সাম দিলাম, তারপর ভর্তি হলাম। এরপর ক্লাস শুরু করেছি, পাশ করেছি। যেদিন পাশ করেছি ওইদিনই এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে জয়েন করেছি। সকালে পাস করেছি আর বিকেলে জয়েন করেছি। ডিপার্টমেন্টে আমার একজন সিনিয়র শিক্ষক ছিলেন। উনি বলেছিলেন মাসুদ যদি জয়েন করে তাহলে আমি যাব না। ওইটাও আমার জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। আমি বিদেশ থেকে উচ্চতর শিক্ষা নিয়ে আবারো এ কুয়েটে ফিরে এসে শিক্ষকতা শুরু করি।
তিনি বলেন, আমি প্রফেসর মাছুদ। আমি দুনিয়ায় আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় পাই না। কাউকে একটা টাকা দিয়ে আমি ভিসি হইনি। কারো কাছ থেকে একটা টাকা নেব না। কোনো টেন্ডার নেব না। আমার নামে যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকে তাহলে তার নাম দয়া করে আমাকে বলবেন আমি সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নেবো।
বিগত দিনের অনিয়ম দুর্নীতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নব-নির্বাচিত ভিসি বলেন, কাগজপত্র জালিয়াতি করে চাকরি নেওয়ার ঘটনায় কয়েকজনের ব্যাপারে আমি নিজেই জানি। অফিসের তথ্য যারা ফাঁস করে, যেসব অনিয়ম, দুর্নীতি, ছাত্র নির্যাতন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক সেলিম সে সরাসরি আমার ছাত্র ছিল, সে কীভাবে মৃত্যুবরণ করেছিল? এসব বিষয়ের তদন্ত হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভিসি বলেন, এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর জাহিদুর রহমানকে নির্যাতনের ঘটনায় আমি যোগদানের দ্বিতীয় দিন তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আমি কি করতে যাচ্ছি, আমি মুখে বলতে নয়, কাজ করতে বিশ্বাস করি। আমার ক্যারেক্টার হচ্ছে আমি খুব দ্রুততার সঙ্গে কাজ করি। যেটা অ্যাকশনে যাচ্ছি, সেটা দেখবেন। আজকে না হলেও কালকে দেখতে পারবেন। আমি যদি বেঁচে থাকি, আর আমি যদি কুয়েটে থাকি। আমি পারসন টু পারসন বলছি না। এখানে যারা আছেন সবাই দৃশ্যমান কিছু দেখতে পাবেন। আমি দল মত কিছুই চাই না। আমি আমার প্রতিষ্ঠান চাই।
তিনি বলেন, আমি আমার নিজের কাছে স্বচ্ছ। দীর্ঘদিনের অনিয়ম। সবকিছু ঠিক করতে একটু সময় লাগবে। সাংবাদিকদের বলেন আমাকে একটু সময় দিন। আমি সব ঠিক করে দিব। কুয়েটের সাবেক আলোচিত ভিসি প্রফেসর ড. আলমগীর সম্পর্কে তিনি বলেন, সাবেক ভিসির দ্বারা কেউ যদি বেশি নির্যাতিত হয়, সে হচ্ছে আমি। সুতরাং কি হবে সময় বলে দেবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯ , ২০২৪
এমআরএম/জেএইচ