ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

টিআইবির গবেষণা ঠিক কি না- জানতে দুই এক্সপার্ট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৪
টিআইবির গবেষণা ঠিক কি না- জানতে দুই এক্সপার্ট

ঢাকা: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতি প্রসঙ্গে টিআইবির প্রকাশিত প্রতিবেদনকে আবারও ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করে গবেষণাটি সঠিকভাবে হয়েছে কি না- জানতে প্রতিবেদনটি দুজন গবেষকের কাছে পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে তাৎক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।



গত ৩০ জুন বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশরাল বাংলাদেশ (টিআইবি) একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

এতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন, নিয়োগ, পাঠদানে অবৈধ লেনদেন হয় বলে তথ্য উঠে আসে।

শিক্ষামন্ত্রী, ইউজিসি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পক্ষ থেকে টিআইবির ওই গবেষণাটিকে প্রত্যাখান করা হলেও, শিক্ষা মন্ত্রণালয় টিআইবির কাছে প্রতিবেদন চেয়ে পাঠায়।

গত ৩ জুলাই টিআইবি প্রতিবেদনটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে দাবি করলেও শিক্ষামন্ত্রী জানান, ৭ জুলাই তিনি তা পেয়েছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সোমবার টিআইবির কাছে প্রতিবেদনে তথ্যদাতার নাম-পদবী, অর্থ লেনদেনে জড়িত ব্যক্তি, জরিপের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়।

টিআইবি চিঠি পাওয়ার আগে গণমাধ্যমে খবর আসাকে সংস্থাটি থেকে ‘মজার বিষয়’ উল্লেখ করার প্রতিক্রিয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
 
গবেষণাটি ত্রুটিপূর্ণ ও তথ্যনির্ভর নয় দাবি করে মন্ত্রী বলেন, দেশবাসীকে হেয় করার জন্য প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। অ্যাম্বাসি থেকে চাপ দিচ্ছে, আমি বলেছি মাত্র কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এ প্রতিবেদন, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।

“গবেষণায় সীমাবদ্ধতা আছে কি না, আন্তর্জাতিকমানের কি না, গবেষণার পর্যায়ে পড়ে কি না- তা জানতে গবেষণা প্রতিবেদনটি দুজন এক্সপার্টের কাছে পাঠানো হয়েছে।

সাংবাদিকরা ওই দুই গবেষকের নাম জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, তাদের অনুমতি ছাড়া বলা যাবে না।

প্রতিবেদনে অসঙ্গতি তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, টিআইবি প্রতিবেদনে গবেষণার প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে গিয়ে অসত্য ও ভুল তথ্য দিয়েই শুরু করেছে। বলা হয়েছে ২০১৩ সালে ৫ লাখ ৬৯ হাজার ২৯৭ জন শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছে। প্রকৃত তথ্য হলো, ২০১২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে ৭ লাখ ২১ হাজার ৯৭৯ জন। ২০১৩ সালে পাস করেছে ৭ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯১ জন। ২০১৩ সালের পাস করা পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৯৪ জন কম দেখানো হয়েছে।

২০১২ সালের হিসেবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ৬০টির মধ্যে ৪৭টি ঢাকায় অর্থাৎ সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ৯৪টি দেখানো হয়েছে।

“প্রশ্ন হলো, তাদের হিসেব অনুযায়ী ৬০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাকায় ৪৭টি। ৯৪টি থেকে ৪৭ বাদ দিলে আর থাকে ৪৭টি। ২০১২ সালে দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ৩৩টি। এর মধ্যে ঢাকায় ৫টি। তাহলে সরকারি সব কয়টিকে ঢাকায় তুলে আনলেও বাকি থাকে আরো ১৩টি? আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা রিপোর্টের এ কোন রূপ?”

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, টিআইবির নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন- সংখ্যাগত ভুল প্রিন্টিং মিসটেক। তাহলে এটি কি আন্তর্জাতিকমানের গবেষণা?

নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী। ইউজিসি ও মন্ত্রণালয় তা প্রসেস করে। শুধুমাত্র একজন তথ্যদাতার তথ্যের ভিত্তিতে এমন ঢালাও অভিযোগ প্রকাশ করা কতটা নৈতিক ভিত্তিসম্পন্ন- তা জানতে চান মন্ত্রী।

গবেষণা কোনো গোপন কর্মকাণ্ড নয় জানিয়ে মন্ত্রী দাবি করেন, দু’বছর ধরে টিআইবি গবেষণা চালালেও কোনো যোগাযোগ করেনি।

টিআইবি তথ্য না দিলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির জন্যই তথ্য চাওয়া হয়েছে। আশা করছি টিআইবি তথ্য দেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২১০৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।