সিলেট: ধ্বংসের মুখে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। টানা অবরোধ আর হরতালে অচল হয়ে পড়ছে অর্থনীতি।
রাজনৈতিক সহিংসতার অবসানে শনিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে আয়োজিত র্যালী পরবর্তী সমাবেশের বক্তব্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসব কথা বলেন।
‘জনসাধারণের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপসহ সব সহিংসতার অবসান হোক’ ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব।
একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে দিনব্যাপী গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপাচার্য আমিনুল হক।
এতে ‘আমার সোনার বাংলাকে বাঁচিয়ে রাখো’ লিখে স্বাক্ষর দেন জনপ্রিয় লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
র্যালী পরবর্তী সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. কবির হোসেন বলেন, হরতাল, অবরোধের নামে নৃশংসভাবে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। আমাদের কী অপরাধ ছিল? দেশের পরিস্থিতির জন্য দায়ী কারা?
বাংলাদেশকে পাকিস্তান কিংবা আফগানিস্তান হিসেবে দেখতে চান না উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনীতিকদের মনোভাব দেশের অর্থনীতি, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দিচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধারা যে স্বপ্ন দেখে দেশ স্বাধীন করেছে, তা আজ ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম দীপু বলেন, রাজনীতি রাজনীতির ভাষায় মোকাবেলা করতে হবে। সাধারণ মানুষ আগুনে পুড়ে মরবে তা যেন না হয়। বিভৎস ঘটনা বন্ধ হোক। সাধারণ মানুষকে আগুনের লেলিহান শিখা থেকে রেহাই দেয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান জানান তিনি।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, আপনি যে দাবি দিয়েছেন তা পূরণ হওয়ার নয়। আপনি নির্বাচনে অংশ নেননি, তাই বলতে পারেন নির্বাচন বাতিল করতে। কিন্তু দুটি শক্তিশালী দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। মানুষ নির্বাচন বাতিল করতে চায় না, আপনার চাওয়া জনগণের চাওয়া নয়।
বাংলাদেশ স্বাভাবিক নিয়মে চলবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আমিনুল হক ভুইয়া বলেন, দেশ ও মানুষের ভালো এবং শিক্ষা কার্যক্রম সচল করার জন্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। পেট্রোল বোমায় মানুষ হত্যা কোনো সভ্য দেশের মানুষের কাজ নয়। ঠিক একইভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাও কাম্য নয়।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য যদি দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে এ রাজনীতি কার জন্য?
প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম টিটুর পরিচালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তচিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষক পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুল আলম প্রমুখ।
এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল আউয়াল বিশ্বাস, অ্যাপ্লাইড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম, ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বিজনেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, এগ্রিকালচার অ্যান্ড মিনারেল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নারায়ন সাহা, গণিত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদার, অর্থনীতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. হাসানুজ্জামান শ্যামল, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. হিমাদ্রি শেখর রায়, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাসুদ আলম, সহকারী প্রক্টর ফখরুল ইসলাম, মুয়্যিদ হাসান, সৌরভ রায়, শাবি প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ফয়েজ মোর্তাজা, অফিস সম্পাদক জাবেদ ইকবাল, কার্যকরী সদস্য আসাদুজ্জামান নয়ন, সামাজিক সাংস্কৃতিক স্বেচ্ছাসেবী ও ক্রীড়াজোটের আহবায়ক মোহাইমেনুল বাশার রাজ, সাবেক আহবায়ক শেখ সাব্বির, শাবি শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি অঞ্জন রায়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহবায়ক কমিটির সদস্য সুদীপ্ত বিশ্বাস সহ ছাত্রলীগ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট সহ বিভিন্ন সংগঠের নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৮ ঘন্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৫