রংপুর থেকে: চার হাজার ছাত্রের জন্য আবাসিক হল মাত্র দুটি। তাও আবার চালু হয়নি কোনোটাই।
এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু হলে প্রভোস্টও নিয়োগ দেওয়া হয় দু’দফা। কিন্তু কেবল বেতন-ভাতা নেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো প্রভোস্টের কার্যক্রম। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সুবিধা না পেয়ে মেস ভাড়া করে থাকতে হচ্ছে ছাত্রদের।
এতে একদিকে যেমন অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তেমনি নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার ছাত্র।
সরেজমিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, একাডেমিক ভবনের পেছনে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে ছয়তলা বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, তার পাশেই মোক্তার এলাহী হল। আশপাশের এলাকায় কাশবন।
নামফলক অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু হলের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে ১৭ মার্চ। ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৎকালীন উপদেষ্টা ড. আলাউদ্দিন আহমেদ।
বঙ্গবন্ধু হল চালু না করায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ছাত্রদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্র বলেন, রংপুরের বাইরের থেকে এসেছি লেখাপড়ার জন্য। আবাসিক হল না থাকার কারণে আমাদের শহরের কোথাও মেস বা বাসা ভাড়া করে থাকতে হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে শুধু বাসা ভাড়া বাবদই এক একজন ছাত্রকে গড়ে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা করে অতিরিক্ত ব্যয় করতে হচ্ছে।
তাছাড়া ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকতে পারলে পড়ালেখা আরও ভালো হতো। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই এ ধরনের সমস্যা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু হলে দুই বছর করে দুইজন প্রভোস্ট নিয়োগ পেলেও হলের কাজ সম্পন্ন করে তা ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। আর তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি শিক্ষককদের সংগঠন নীল দলের সভাপতি আপেল মাহমুদ।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, দুই দফায় প্রভোস্ট নিয়োগ দেয়া হলো। কাজও এখন শেষ। কিন্তু হলটি সাধারণ ছাত্রদের জন্য খুলে দেয়া হলো না। এর দায় প্রভোস্ট ও ভিসি মহোদয়ের। কারণ সময়ে প্রভোস্টরা ঠিকই বেতন নিযেছেন। প্রভোস্টদের বেতন ফেরত নেয়া উচিত।
বঙ্গবন্ধু হলে আসন রয়েছে প্রায় ৪০০। হল চালু না হওয়ায় ছাত্রদের বেশি খরচ হচ্ছে বলেও জানান আপেল মাহমুদ।
বঙ্গবন্ধু হলের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোরশেদ উল আলম বাংলানিউজকে বলেন, হলটি উদ্বোধনের উদ্যোগ নেয়া হলেও আন্দোলনের কারণে তা চালু করা যায়নি।
নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ দায়িত্ব দেরিতে বুঝিয়ে দেয়ায় হল এখনো চালু করা যায়নি। তবে আশা করছি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এ সমস্যার সমাধান হবে।
বঙ্গবন্ধু হল ছাড়াও ছাত্রদের জন্য মোক্তার এলাহী হলের কাজ প্রায় শেষ। এই দুটি হল উদ্বোধন হলে প্রায় ৭০০ ছাত্রের আবাসন সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৪
ইউএম/এমআইএইচ/জেডএম