ঢাকা: তিনবছর ধরে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। দায়িত্বে একজন সহকারী শিক্ষক।
টিফিনের সময় গড়িয়ে গেলেও শিশুদের কেউ ক্লাসরুমের বারান্দায়, আবার একদল খেলছে মাঠে। পঞ্চম শ্রেণির একটি ক্লাস চললেও স্কুলজুড়ে শিশুদের হৈ চৈ, পাঠ বিঘ্ন।
লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রামের বঙ্গোরবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটি। প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষক সংকটে থাকা বিদ্যালয়ের এ চিত্র চোখে পড়ে এপ্রিল মাসের শেষ দিকে।
পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষার বিঘ্ন ঘটা ছাড়াও শিক্ষকরা সুষ্ঠুভাবে মনোনিবেশ করতে পারছেন না পাঠদানের কাজে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, প্রধান শিক্ষকের একটি, সহকারী শিক্ষকের পাঁচটি এবং প্রাক-প্রাথমিকে একটিসহ মোট শিক্ষকের পদ সাতটি। অথচ বিদ্যালয়ে এখন মাত্র চারজন শিক্ষক রয়েছেন।
দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে অফিসিয়াল কাজে মাঝে মধ্যেই জেলা সদরে যেতে হয়। কেউ ছুটিতে থাকলে বাড়তি চাপ পড়ে দু’একজনের উপর। দিনে ৭/৮টি করে ক্লাস নিতে হয় ২/৩ জন শিক্ষককে। স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪ শ ৯২ জন।
এই সরকারি বিদ্যালয়ের মতো দেশের প্রায় ১৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখন প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। দীর্ঘদিন নিয়োগ না হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এই সংখ্যা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে ৬৫ শতাংশ পদোন্নতি ও পরীক্ষা নিয়ে নতুন করে ৩৫ শতাংশ প্রধান শিক্ষকের পদ পূরণ করা হয়।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শূন্যতা পূরণে তাগাদা দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। গত ১৮ মার্চ ‘সব শিশুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ও ২০১৪ সালের মধ্যে নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন’র লক্ষ্যে জাতীয় টাস্কফোর্সের সভায় এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দেশের বাইরে থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
প্রধান শিক্ষক স্বল্পতায় বিদ্যালয়ের পাঠদানসহ অন্যান্য কার্যযক্রমে বিঘ্ন হচ্ছে স্বীকার করেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সন্তোষ কুমার অধিকারী। তিনি বলেন, শিগগিরই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০২ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৫
এমআইএইচ/এএ