ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: নিজ বিভাগের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
মঙ্গলবার (৩০ জুন) বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিভাগটির চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রীকে নিজ রুমে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানি করেন এই শিক্ষক। পরদিন ওই ছাত্রী উপাচার্য ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও এই শিক্ষককে আজীবন বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে ওই ছাত্রী বলেন, মিডটার্ম পরীক্ষার খাতায় খারাপ করার কারণে তাকে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম ফোন করেন এবং তার রুমে নিয়ে যান। এরপর তাকে জোর করে বিছানায় নিতে চাইলে ওই ছাত্রী এর প্রতিবাদ জানান এবং সেখান থেকে বের হয়ে আসেন। অভিযোগপত্রের সঙ্গে মুঠোফোনে ধারণ করা ‘অধ্যাপক সাইফুলের অনৈতিক প্রস্তাবের’ একটি অডিও রেকর্ড যুক্ত করেন ছাত্রীটি।
এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা সাইফুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করার দাবিতে তার কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখে।
শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে ওইদিন বিকেলেই সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভা আহ্বান করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সাইফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এরপর ওই বছরের ১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইনকে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা ছিলেন- সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, স্যার পি জে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ এফ এম মেজবাহউদ্দিন এবং ঢাবি ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোসাম্মৎ নীলিমা আকতার।
ওই বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
তবে তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছিলেন সাইফুল ইসলাম। তবে রেকর্ডিংয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বরাবরই চুপ ছিলেন।
ওই ছাত্রীর দেওয়া অডিও রেকর্ড শুনে এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানান ঢাবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এএম আমজাদ।
সর্বশেষ মঙ্গলবারের সিন্ডিকেট সভায় তাকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হএলা।
বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৫/আপডেট: ২১১৯ ঘণ্টা
এসএ/এএ