বাকৃবি (ময়মনসিংহ): অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার ৯ মাস পরেও অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ৭ম সমাবর্তন।
অনতিবিলম্বে সমাবর্তন আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন রেজিস্ট্রেশনকৃত শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ২০১৫ সালে পাশকৃত শিক্ষার্থীদের ৭ম সমাবর্তনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সদ্য পাশকৃত শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ ৫৪ বছরে বাকৃবিতে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে মাত্র ৬ বার। প্রতিষ্ঠার পর ১৯৬৮ সালের ২৮ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় বাকৃবির প্রথম সমাবর্তন। তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ছিলেন আব্দুল মোনেম খান।
এর পর আবু সাঈদ চৌধুরীর নের্তৃত্বে ২য় সমাবর্তন হয় ১৯৭২ সালের ৩১ ডিসেম্বর, বেগম খালেদা জিয়ার নের্তৃত্বে ৩য় সমাবর্তন হয় ১৯৯৪ সালের ৫ জুন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৪র্থ সমাবর্তন হয় ১৯৯৭ সালের ২০ ডিসেম্বর, ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নের্তৃত্বে ৫ম সমাবর্তন হয় ২০০৩ সালের ০৫ ফেব্রুয়ারি এবং প্রয়াত চ্যান্সেলর মো. জিল্লুর রহমানের নের্তৃত্বে সর্বশেষ সমাবর্তন হয় ২০১১ সালের ৮ মার্চ।
চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল বাকৃবির ৭ম সমাবর্তন। কিন্তু তৎকালীন সময়ে চলমান হরতাল অবরোধে দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশ ও রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে স্থগিত করা হয় ৭ম সমাবর্তনের তারিখ।
কিন্তু পরবর্তীতে ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও ঘোষণা করা হয়নি সমাবর্তনের সম্ভাব্য তারিখ। সমাবর্তন না হওয়ায় নবগঠিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন রেজিস্ট্রেশনকৃত শিক্ষার্থীরা।
সমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজন করতে না পারলে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে নেওয়া ১০০০ টাকা রেজিস্ট্রেশনের ফি ফেরতে দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী।
৭ম সমাবর্তনে রেজিস্ট্রেশনকারী শিক্ষার্থী খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ বলেন, দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতিবছরই সমাবর্তনের আয়োজন করে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কথা না হয় বাদই দিলাম। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর তো দূরের কথা বেশ কয়েক বছরেও একবার সমাবর্তন হয় না। দীর্ঘ ৫৪ বছরের পথচলায় বাকৃবিতে মাত্র ৬ বার সমাবর্তন হয়েছে। এই ব্যর্থতা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। যথাযথ উদ্যোগ আর সদিচ্ছা থাকলে প্রতিবছরই সমাবর্তন আয়োজন করতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সদ্য পাশকৃত শিক্ষার্থীদের ৭ম সমাবর্তনে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে পশুপালন অনুষদের নূরে আলম তপন বলেন, ৭ম সমাবর্তনে যদি আমাদের সেশনকে (২০১০-১১ সেশন) অন্তর্ভুক্ত করা না হয় তবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশকৃত গ্রাজুয়েটদের একটি বিরাট অংশ সমাবর্তন থেকে বাদ পড়ে যাবে।
তাছাড়া পরবর্তীতে কবে সমাবর্তন হবে তা নিয়ে আমরা সন্দিহান। তাই আমাদের ৭ম সমাবর্তনে অন্তর্ভুক্ত করে অবিলম্বে সমাবর্তন আয়োজনে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি আহ্বান করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এডিশনাল রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) মো. সারওয়ার জাহান জানান, আগামী বছরের জানুয়ারিতে ৭ম সমাবর্তন আয়োজনের জন্য সময় চাওয়া হয়েছে। চ্যান্সেলরের সময় প্রদানের উপর নির্ভর করছে সমাবর্তনের তারিখ।
২০১০-১১ সেশনের শিক্ষার্থীদের সমাবর্তনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে কি না সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবরের সঙ্গে বেশ কয়েকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, আগামী বছরের জানুয়ারিতে সমাবর্তন করার অনুমতির চেয়ে অক্টোবরের শেষের দিকে রাস্ট্রপতির কাছে আবেদন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৫
আরএ