ঢাকা: শিক্ষক নিয়োগে ব্যবস্থাপনা কমিটির ক্ষমতা খর্ব করায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে গেজেট প্রকাশের আগের তারিখ দেখিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে এমন অনিয়ম চলছে বলে জোর অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশোধিত বিধিমালা স্পষ্ট করার উদ্যোগ নিয়েছে।
‘বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা, ২০০৬’ সংশোধন করে ২২ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
সংশোধিত বিধিমালায় বলা হয়, কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর নভেম্বর মাসের মধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে জেলার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পদ ও বিষয়ভিত্তিক শূন্য পদের তালিকা সংগ্রহ করবে। এর আগে উপজেলা থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে তালিকা নেবে জেলা শিক্ষা অফিস। জেলা শিক্ষা অফিসার তালিকা যাচাই করে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবে এবং কর্তৃপক্ষ ওই তালিকার ভিত্তিতে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করবে।
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় পৃথকভাবে পাস নম্বর ধরা হয় ৪০। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের উপজেলা, জেলা এবং জাতীয়ভিত্তিক মেধা তৈরি করে প্রকাশ করা হবে।
পরীক্ষা নেওয়ার ২০ দিনের মধ্যে প্রিলিমিনারির ফল (বিশেষ ক্ষেত্রে আরও ১০ দিন বেশী), লিখিত পরীক্ষার ফল ৪৫ দিন (বিশেষ ক্ষেত্রে আরও ১৫ দিন), মৌখিক পরীক্ষার ফল ৩০ দিনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে।
চূড়ান্ত ফল প্রকাশের সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষ উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নিবন্ধন রেজিস্ট্রার করবে।
নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ প্রণীত মেধা তালিকা অনুসরণযোগ্য হবে- বলে সংশোধিত বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
আগে শুধু নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করলেই আবেদন করে নামে মাত্র পরীক্ষা দিয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটির ইচ্ছায় মোটা অঙ্কের লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ সম্পন্ন হতো।
সনদের মেয়াদ ‘আজীবন’ থেকে কমিয়ে সংশোধিত বিধিমালায় করা হয়েছে তিন বছর।
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের নতুন পদ্ধতির বিষয়ে গত ১৪ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
বিধিমালা সংশোধনের পর গেজেট প্রকাশের দিন ২১ অক্টোবরের আগের তারিখ দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রার্থীর কাছে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ১০ থেকে ২০ লাখ পর্যন্ত টাকা নিয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়োগ দিচ্ছে বলে জানান একাধিক চাকরিপ্রার্থী।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক শাখার একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, নিয়োগের নতুন পদ্ধতি কবে থেকে কার্যকর হবে, তা স্পস্ট না থাকায় এই সুযোগ নিচ্ছে ব্যবস্থাপনা কমিটি।
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, ২২ অক্টোবরের আগে যারা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে তারা আগের পদ্ধতিতে নিয়োগ দিতে পারবে।
তবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান ইউনেস্কোর সম্মেলনে যোগ দিতে দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে স্পস্টীকরণ বিলম্বিত হয়।
আগামী দু’এক দিনের মধ্যে বিধিমালা স্পষ্টকরণ বা এ বিষয়ে নীতিমালা প্রকাশ করা হবে বলে জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
এতে নতুন পদ্ধতিতে নিয়োগের বিষয়টি বিস্তৃত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৫
এমআইএইচ/জেডএম