ঢাকা: ‘বিতর্কিত’ কার্যক্রমে লিপ্ত থাকায় রাজধানীর লালমাটিয়ার পিস স্কুলের সাময়িক নিবন্ধন বাতিল করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। তবে ঢাকার বাকী পিস স্কুল ও কলেজগুলোর অনুমোদন না থাকায় লিখিত কোনো তথ্য নেই বোর্ডের কাছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারমান মাহবুবুর রহমান মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) বিকেলে বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে লালমাটিয়ার পিস স্কুলের সাময়িক অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।
বিতর্কিত কার্যক্রমে লিপ্ত থাকায় ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয় পিস ইন্টারন্যাশনাল স্বুল, লালমাটিয়ার সাময়িক নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে- বলেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান।
লালমাটিয়ার বাড়ি নং-৫/৭, ব্লক-বি’তে অবস্থিত স্কুলটি ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকা বোর্ড থেকে সাময়িক অনুমোদন নিয়েছিল।
বিতর্কিত পিস টিভির পর অনুমোদনহীন দেশের সব পিস স্কুল অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য এদিন নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানানো হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, বিতর্কিত কার্যক্রমে লিপ্ত থাকায় লালমাটিয়ার পিস স্কুলটির পাঠদানের অনুমতি বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অনুমোদনহীন অসংখ্য শাখা
ঢাকাসহ সারা দেশে পিস স্কুলের অসংখ্যা শাখা রয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।
ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা এসব স্কুল কোনো অনুমোদন ছাড়া কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলো বলে জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ভারতের ‘বিতর্কিত বক্তা’ জাকির নায়েকের পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধের পর তার পিস স্কুলগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে অনুসন্ধান চালানো হয়। এরপরই পিস স্কুলগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গত ১১ জুলাই তথ্য মন্ত্রণালয় পিস টিভির ডাউন লিঙ্ক বাতিলের আদেশ জারি করে।
পিস স্কুলগুলোর অনেকগুলোর জামায়াত-শিবির দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। অনুমোদনহীন স্কুলগুলো কলেজ পর্যায় পর্যন্ত কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
ঢাকায় লালমাটিয়া ছাড়াও উত্তরা, বাড্ডা, মিরপুরের রূপপুরে এসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে জানায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তারা। তবে সেগুলোর অনুমোদন বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। তারা নিজেদের মত করে গড়ে উঠেছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, বাড্ডা এবং উত্তরায় পিস নামে দু’টি কলেজ রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া রূপনগরে আরেকটি স্কুল রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দিশনা চাওয়া হবে।
উত্তরার পিস স্কুল অবৈধ
পিস স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে উত্তরায় ১৩ নম্বর সেক্টরে ৫ নম্বর বোডের ৫৯ নম্বর বাড়িতে রয়েছে একটি প্রতিষ্ঠান।
ওয়েবসাইট ঘেঁটে এ স্কুলের তিনটি নম্বরে চেষ্টা করে একটি মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়।
নিজেকে স্কুল পরিচালনা কমিটির একজন দাবি করে শিমুল আক্তার নামে এক নারী বলেন, থানা ও জেলা শিক্ষা অফিস থেকে লোকজন এসে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে গেছে। আমরাও গিয়ে তথ্য দিয়ে এসেছি।
প্লে থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত চালু থাকা স্কুলটিতে পৌনে চারশ’ শিক্ষার্থী রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, থানা শিক্ষা অফিস থেকে কেজি শাখার অনুমোদন নিয়েছি। দশ জন মিলে এ স্কুল পরিচালনা করছেন তারা।
দেশের সব পিস স্কুল বন্ধের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে উদ্বেগ থাকলেও কলেজ শাখার বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি পরিচালনা কমিটিতে থাকা শিমুল আক্তার।
তার দাবি পিস স্কুলের সঙ্গে নামটি মিলে গেছে, নামটি শুনতে ভাল লাগে এজন্য ২০১৩ সাল থেকে ওই নামে কার্যক্রম চালনানো হচ্ছে। তিন বছর ধরে এখানকার শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছে বলে দাবি তার।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৬
এমআইএইচ/এসএইচ
**পিস স্কুল বন্ধের নির্দেশ