জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: হলের দাবিতে আন্দোলনরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট শুরু হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা পুরান ঢাকার নয়াবাজার মোড় অবরোধ করতে গেলে রায়সাহেব বাজার মোড়ে এ ধস্তাধস্তি হয়।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সকাল ১০টার আগে এ ধস্তাধস্তি হয়। ধস্তাধস্তির পর থেকে রায়সাহেব বাজার মোড়ে অবরোধ চলছে শিক্ষার্থীদের। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা আবার নয়াবাজার বাজার মোড়ের দিকে যেতে চাইলে ফের পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় তাদের। তবে এবারও তাদের সামনে যেতে দেয়নি পুলিশ।
এর আগে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষকদের বাস থামিয়ে ধর্মঘট শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে, প্রধান ফটকের অর্ধেক অংশ কর্তৃপক্ষ কেটে ফেলায় সেটিতে তালা দিতে না পারলেও সবক’টি ভবনেরই ফটকে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন তারা। শিক্ষার্থীরা তালা লাগিয়ে দিয়েছেন ভিসি ড. মীজানুর রহমানের কার্যালয় ভবনেও।
আন্দোলনকারীদের অবরোধের কারণে রায়সাহেব বাজার ও জনসন রোড, ইংলিশ রোড, ধোলাইখাল রোডসহ সংলগ্ন সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে পুরান ঢাকা। অবরোধের কারণে এসব এলাকার দোকানপাটও বন্ধ করে দিতেও দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা পিছু হটার জন্য আন্দোলন করতে আসেননি। দাবি আদায় হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলছে এবং চলবে।
এ সম্পর্কে পুলিশের লালবাগ জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইব্রাহীম খান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা তাদের বলেছি তাদের আন্দোলনে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। তারা একটি প্রতিনিধি দল প্রেরণ করলে আমরা তাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করানোর চেষ্টা করবো। এখানে আমরা ব্যারিকেড দিয়েছি তাদের এর সামনে যেতে দেওয়া হবে না।
এদিকে, নিরাপত্তার স্বার্থে এই মুহূর্তে রায়সাহেব বাজার মোড় সংলগ্ন সকল দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
নতুন হল নির্মাণ ও নাজিমউদ্দিন রোডে পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে (জবি) স্থায়ীভাবে লিজ দেওয়ার দাবিতে আগস্টের প্রথম থেকে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এ দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি নিয়ে সোমবার (২২ আগস্ট) সকালে শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বংশাল এলাকায় তাদের ‘বাধা দেয় এবং লাঠিচার্জ করে’। তৎক্ষণাৎ শিক্ষার্থীরা নয়াবাজার মোড়ে অবস্থান নিয়ে অবরোধ পালন করতে থাকেন। এরপর দুপুরে শিক্ষার্থীরা ২৩ ও ২৪ আগস্ট ধর্মঘট কর্মসূচি ডাকেন।
প্রতিষ্ঠার প্রায় ১১ বছর পার হলেও এই মুহূর্তে কোনো হল নেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি)। এর আগে ২০০৯, ২০১১, ২০১৪ সালে হল নিয়ে জোরালো আন্দোলন হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আন্দোলনের সময় প্রশাসন কিছুটা দৌড়ঝাপ দেখালেও পরবর্তী সময়ে আর কোনো তৎপরতাই দেখা যায় না তাদের।
শিক্ষার্থীদের এবারের আন্দোলনে সমর্থন রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এবং আওয়ামী লীগ ও বামপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের। সমর্থন রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগেরও।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৬/আপডেট ১৬১৬ ঘণ্টা
এইচএ/
** ছাত্র ধর্মঘটে অচল জবি, ভিসি ভবনে তালা
** জগন্নাথে মঙ্গল ও বুধবার ধর্মঘট
** জবিতে অনির্দিষ্টকালের ছাত্র ধর্মঘটের ডাক
** জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্থবির পুরান ঢাকা
** জবি শিক্ষার্থীদের অবরোধে অচল পুরান ঢাকা, আন্দোলনে ছাত্রলীগও
** জবি শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জ
** জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শিক্ষক সমিতি ও নীল দলের সমর্থন
** প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে জবি শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা সোমবার
** হলের দাবিতে ধর্মঘটে অচল জবি
** রোববার পর্যন্ত আলটিমেটাম জবি শিক্ষার্থীদের