জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: নতুন হল নির্মাণ ও নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারের জায়গায় হল করে আবাসন সংকট নিরসনের দাবিতে আন্দোলনরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট ঘোষণা ছাড়া তারা কারও সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসবে না।
শিক্ষার্থীদের দু’দিনের ধর্মঘটের প্রথম দিনের কর্মসূচি শেষে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে তদের পক্ষে রাশেদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বিষয়টি জানান।
আরেক শিক্ষার্থী রুহুল আমিন বলেন, আমরা এক বা দু’জন এখানে আন্দোলন করছি না, তাই আমরা এক-দু’জন আলোচনায় বসতে পারবো না। আলোচনা করতে হলে আমাদের ২১ হাজার শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে নিয়েই করতে হবে। এদিকে, গত ১৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক জরুরি সভায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামানকে প্রধান করে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষার্থীদের আলোচনায় বসাতে ৩ কর্মদিবস বেঁধে দেওয়া হলেও তা পারেনি কমিটি। মঙ্গলবার দুপুরে আন্দোলনকারীদের বসার জন্য আহবান করা হলেও এতে সায় আসেনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দুপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা এ আহ্বানে সাড়া দেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূর মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ তাদের কাজ তাদের মত করবে। পুলিশের কার্যক্রম সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। এছাড়া পুলিশের কাছে বিভিন্ন তথ্য থাকে সেক্ষত্রে তারা সে বিষয়ে জানেন।
হলের দাবিতে আগস্টের প্রথম থেকে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এ দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি নিয়ে সোমবার (২২ আগস্ট) সকালে শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বংশাল এলাকায় তাদের ‘বাধা দেয় এবং লাঠিচার্জ করে’। তৎক্ষণাৎ শিক্ষার্থীরা নয়াবাজার মোড়ে অবস্থান নিয়ে অবরোধ পালন করতে থাকেন। এরপর দুপুরে শিক্ষার্থীরা ২৩ ও ২৪ আগস্ট ধর্মঘট কর্মসূচি ডাকেন।
সে কর্মসূচির প্রথম দিন পুলিশের সঙ্গে এক দফায় ধস্তাধস্তি ছাড়া তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, তাদের ধর্মঘট ২৪ আগস্ট বুধবারও চলবে।
প্রতিষ্ঠার প্রায় ১১ বছর পার হলেও এই মুহূর্তে কোনো হল নেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি)। এর আগে ২০০৯, ২০১১, ২০১৪ সালে হল নিয়ে জোরালো আন্দোলন হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আন্দোলনের সময় প্রশাসন কিছুটা দৌড়ঝাপ দেখালেও পরবর্তী সময়ে আর কোনো তৎপরতাই দেখা যায় না তাদের।
শিক্ষার্থীদের এবারের আন্দোলনে সমর্থন রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এবং আওয়ামী লীগ ও বামপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের। সমর্থন রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগেরও।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৬
এইচএ/
** প্রথম দিনের ধর্মঘট সফল দাবি জবি শিক্ষার্থীদের, চলবে বুধবারও
** পুলিশ-জবি শিক্ষার্থী ধস্তাধস্তি, রায়সাহেব বাজার মোড় অবরোধ
** ছাত্র ধর্মঘটে অচল জবি, ভিসি ভবনে তালা
** জগন্নাথে মঙ্গল ও বুধবার ধর্মঘট
** জবিতে অনির্দিষ্টকালের ছাত্র ধর্মঘটের ডাক
** জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্থবির পুরান ঢাকা
** জবি শিক্ষার্থীদের অবরোধে অচল পুরান ঢাকা, আন্দোলনে ছাত্রলীগও
** জবি শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জ
** জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শিক্ষক সমিতি ও নীল দলের সমর্থন
** প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে জবি শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা সোমবার
** হলের দাবিতে ধর্মঘটে অচল জবি
** রোববার পর্যন্ত আলটিমেটাম জবি শিক্ষার্থীদের