সিলেট: একদশক পূর্তিতে বর্ণাঢ্য সাজে সেজেছে সিকৃবি ক্যাম্পাস। বহুমাত্রিক সাফল্য ও অমিত সম্ভাবনা নিয়ে দশ বছর অতিক্রম করলো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কৃষি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি)।
দু’দিন আগে থেকেই বর্ণিল আলোকসজ্জা ও সড়কে তুলির আঁচড়ে রঙিন হয়েছে দেশের চতুর্থ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীর প্রাণের উচ্ছ্বাসের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে সিকৃবি।
শনিবার (০৫ নভেম্বর) প্রায় দশটি ট্রাকে করে নগরীর চৌহাট্টা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। সেখান থেকে তারা একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে। নানা রঙে ও পোশাকে সজ্জিত এ শোভাযাত্রাটি জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, ধোপাদীঘিরপাড় হয়ে সিলেট শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসে এস শেষ হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. গোলাম শাহি আলমের নেতৃত্বে শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার মো. বদরুল ইসলাম, পরিচালক (ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা) প্রফেসর ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার, প্রক্টর প্রফেসর ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস, বিভিন্ন অনুষদের ডিনরা, দফতর প্রধানরা, শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এবং ক্যাম্পাসের প্রাণ সিকৃবির ৬ অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
শোভাযাত্রা শেষে ক্যাম্পাসের প্রশাসন ভবনের সামনে দিনটি উপলক্ষে কেককাটা ও মিষ্টিবিতরণ করা হয়।
এদিকে, বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। ক্যাম্পাসের লেক সাইডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের তোলা চমৎকার সব ছবি স্থান পেয়েছে এ প্রদর্শনীতে। বিভিন্ন অনুষদ থেকে দেয়াল পত্রিকা প্রকাশ হয়েছে, শনিবারই পত্রিকাগুলো উন্মোচিত করা হয়।
সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস মাতালো সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। বিভিন্ন অনুষদের শিল্পীরা নাচে গানে জাকজমক হয়ে ওঠবে সিকৃবির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
দু’দিনব্যাপী আনন্দ আয়োজনের অংশ হিসেবে রোববার (০৬ নভেম্বর) দুপুর তিনটায় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে পুরো ক্যাম্পাস বাংলা গানের ব্যান্ড শিরোনামহীনকে নিয়ে উৎসবমুখর হয়ে ওঠেছে। সন্ধ্যা ৬টায় প্রশাসন ভবনের সামনে নির্মিত মঞ্চে গান গাইবে শিরোনামহীন, কাইটস ও মেট্রোনম। মঞ্চটি যেন শুধু কাঠ ও বাঁশের মঞ্চ নয়, দশ বছরের সুখ-দুঃখ আর স্মৃতি আনন্দের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেছে। ক্যাম্পাসের এ আনন্দ উৎসবে যোগ দিতে ইতোমধ্যে সাবেক সিকৃবিয়ানরা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন।
৫০ একর জমি নিয়ে ২০০৬ সালের ২ নভেম্বর সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস যাত্রা করেছিলো। মূল ক্যাম্পাসের বেশির ভাগ জমি টিলা ও জঙ্গলবেষ্টিত। শিক্ষক বা শিক্ষার্থীরা গবেষণার জন্য জমি গতবছর বহিঃক্যাম্পাস হিসেবে ফেঞ্চুগঞ্জ-তামাবিল বাইপাস সড়ক সংলগ্ন খাদিম নগর এলাকায় ১২ দশমিক ২৯ একর জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়।
গবেষণা ও শিক্ষাখাতে সাফল্য এবং চমৎকার প্রশাসনিক কাঠামো এ ক্যাম্পাসকে সারা বাংলাদেশে পরিচিতি এনে দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৬
এনইউ/ওএইচ/বিএস