ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

গবেষণায় এগিয়ে জাবির প্রাণরসায়ণ বিভাগ

ওয়ালিউল্লাহ ও নুর আলম হিমেল | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬
গবেষণায় এগিয়ে জাবির প্রাণরসায়ণ বিভাগ ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বাংলাদেশের গবেষণা খাতকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণরসায়ণ ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: বাংলাদেশের গবেষণা খাতকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণরসায়ণ ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ। ১৮ বছর ধরে দেশে ও বিদেশে গবেষণা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে বিভাগটি।


১৯৯৮ সালে চারজন শিক্ষক ও ১৬ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাত্রা শুরু করে বিভাগটি। অধ্যাপক এস এম বদিয়ার রহমান, অধ্যাপক আবুল খায়ের, অধ্যাপক মো. শাহাদাত হোসেন- এ তিন শিক্ষকের অক্লান্ত পরিশ্রমে দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও খ্যাতি লাভ করতে সক্ষম হয়েছে বিভাগটি| গত ১৮ বছরে ১২টি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবন শেষে করে দেশে ও  বিদেশে গবেষণা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। আমেরিকা, কানাডা, রাশিয়া, জাপান, জার্মানি, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, বেলজিয়ামসহ বিভিন্ন দেশে গবেষণা করছেন তারা।

বর্তমানে প্রাণরসায়ণ ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগে ২৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। আর বিভাগটির অধীনে ২৯ জন শিক্ষার্থী পিএইচডি ও ১০ জন শিক্ষার্থী এমফিল করছেন।
বিভাগটিতে বায়োকেমিস্ট্রি (প্রাণরসায়ন) ও মলিকুলার বায়োলজি (অনুপ্রাণ বিজ্ঞান) ছাড়াও  মেমডিকেল সম্পর্কিত বিষয় যেমন- হিউম্যান ফিজিওলজি (মানব শারীরবিদ্যা), নিউরোসায়েন্স কেমিস্ট্রি (স্নায়ুবিজ্ঞান রসায়ন), সেলবায়োলজি (কোষবিজ্ঞান), মাইক্রোবায়োলজি (অনুজীব বিদ্যা), ভাইরোলজি (ভাইরাস বিদ্যা), ক্লিনিক্যাল কেমিস্ট্রি (রোগশয্যা বিদ্যা), মেটাবলিজম (বিপাকক্রিয়া সম্পর্কিত বিদ্যা), প্লান্ট বায়োকেমিস্ট্রি (উদ্ভিদ রসায়ন), জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (জীব ও প্রযুক্তি) ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হয়।

বিভাগটি যেসব গবেষণাধর্মী কাজ করা হয় তার মধ্যে রয়েছে- বায়োমেডিকেল রিসার্চ, মলিকুলার  লেভেলে জিন পলিমরফিজম (মানুষের জিন সম্পর্কিত রোগ), অ্যানিমেল বিহেভিয়ার (প্রাণীর আচরণ), অলটারনেটিভ মেডিসিন (ওষুধের বিকল্প হিসেবে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে রোগ নিরাময়) ইত্যাদি বিষয়ে উচ্চতর গবেষণা করা হয়।

'ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ (আইসিডিডিআরবি), বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি (এনআইবি), পরমানু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিসহ বিভিন্ন নামী-দামি প্রতিষ্ঠানে এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা গবেষণা করছেন।

প্রাণরসায়ণ ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী পূজা বিশ্বাস বলেন, ‘এ বিভাগে পড়তে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। বর্তমানে আমি ‘কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ’ এর সঙ্গে ‘লিপোপ্রোটিন’ এর সম্পৃক্ততা নিয়ে গবেষণা করছি। এরই মধ্যে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব সাসকেচোয়াতে গবেষণা করার সুযোগ পেয়েছি। আগামী জানুয়ারিতে আমি ‘কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ’ এর ওপর গবেষণা করতে কানাডায় যাচ্ছি। যা আমার জন্য খুব সৌভাগ্যের’।

৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রায়হান আহমেদ বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে গবেষণার প্রতি আমার তীব্র আকর্ষণ ছিল। এ বিভাগে ভর্তি হতে পেরে আমি সে সুযোগ পেয়েছি’।

প্রাণরসায়ণ ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক মোহা. সাবির হোসেন বলেন, ‘শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যৌথ প্রচেষ্টায় আমাদের বিভাগটি আজ উন্নতমানের গবেষণাধর্মী বিভাগে পরিণত হয়েছে। সকলের সহযোগিতা পেলে এ বিভাগ আরো এগিয়ে যাবে এবং দেশে ও বিদেশে গবেষণা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে’।

বিভাগীয় প্রথম সভাপতি অধ্যাপক এস এম বদিয়ার রহমান বলেন, ‘বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকরা যদি তৎপর থাকেন, তাহলে এ বিভাগের গবেষণা কার্যক্রম আরো বেশি ত্বরান্বিত হবে’।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।