শনিবার (১৭ জুন) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত সিনেট অধিবেশনে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
ঢাবি কোষাধ্যক্ষ বলেন, আমাদের এ প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ অধ্যাদেশের সুযোগ নিয়ে কিছু ব্যক্তিস্বার্থকেন্দ্রিক, কম মেধাসম্পন্ন শিক্ষক একাডেমিক লিডার বনে যাচ্ছেন।
বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয় সান্ধ্যকালীন কোর্সগুলো শুধু ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল ও অর্থ লাভের আকাঙ্ক্ষায় অসংখ্য নিম্নমানের গ্রাজুয়েট তৈরি করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম রক্ষায় এ ব্যাধী সংক্রামিত হওয়ার আগে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণ। অর্থবিহীন নামে-বেনামে অসংখ্য সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স প্রোগ্রাম খোলা, কখনও কখনও নামেমাত্র বা ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া নিম্নমানের ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হচ্ছে। তবে আশার বিষয় হচ্ছে কয়েকটি মাত্র ইনস্টিটিউট এবং বিভাগ এ ধরনের শিক্ষা-বাণিজ্যে জড়িত, যা আমাদের মোট বিভাগের ১০ ভাগের বেশি নয়। তবে এ ব্যাধী সংক্রমিত হচ্ছে।
চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে ঢাবির সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছু বিভাগ কিছু সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চাকরির নিয়োগ-পরীক্ষা নেয়। কিন্তু নিয়মানুযায়ী ওই কাজের মোট আয় থেকে ১০ ভাগ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা দেয় না। মাঝে মধ্যে প্রশ্ন ফাঁস করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে। তবুও এ বিষয়ে কারো শাস্তি হয় না।
এসময় তিনি চারটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। সেগুলো হল- উপ উপাচার্য বা কোষাধ্যক্ষকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে এসব সান্ধ্যকালীন ও বিভিন্ন ট্রেনিং কর্মকাণ্ডের উপর বিশদ রিপোর্ট তৈরি করে উপাচার্যের কাছে পেশ, বর্তমানে সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রামের আয়ের ৩০ ভাগ থেকে বৃদ্ধি করে ৪০ ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডে জমা দেওয়া, সেখান থেকে ১০ ভাগ যেসব বিভাগে এসব কোর্স নেই সেখানে ব্যয় করা। এছাড়া নতুন বিভাগ খোলা হলে সেখানে তিন বছর পর্যন্ত এসব কোর্স না খোলা এবং চাকরির পরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত আয়ের ১০ ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়কে না দিলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
তবে তিনি সীমিত পর্যায়ে এসব কোর্স চালু রাখা, মান নিশ্চিত করা, নিয়মিত শিক্ষার্থীদের তুলনায় সান্ধ্যকালীন কোর্সের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কম রাখার পক্ষে মত দেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২১ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৭
এসকেবি/জেডএস