ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শতবর্ষ অনুষ্ঠান দাবিতে কারমাইকেল কলেজ অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭
শতবর্ষ অনুষ্ঠান দাবিতে কারমাইকেল কলেজ অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ শতবর্ষ অনুষ্ঠান দাবিতে কারমাইকেল কলেজ অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ, ছবি: বাংলানিউজ

রংপুর: রংপুরের ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজের শতবর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে ব্যাপক ঢাকঢোল পিটিয়েও প্রায় এক বছরে কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে রোববার (২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনে অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ মিয়াকে নিজ কক্ষে অবরুদ্ধ করে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। শতবর্ষ অনুষ্ঠান দাবিতে কারমাইকেল কলেজ অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ, ছবি: বাংলানিউজতবে কর্তৃপক্ষ গত বছরের নভেম্বর থেকে বিলম্বিত অনুষ্ঠান আগামী ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আয়োজন করার আশ্বাস দিলে অবরোধ ও বিক্ষোভ তুলে নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থী ও কলেজ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১০ নভেম্বর শতবর্ষে পদার্পণ করে ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত কারমাইকেল কলেজ। এ উপলক্ষে কলেজ কর্তৃপক্ষ জমকালো আয়োজনের ঘোষণা দিলে এতে অংশগ্রহণের জন্য কলেজের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিয়মিত সাড়ে ১০ হাজার ও সাবেক ৩ হাজার শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেন। চালানো হয় ব্যাপক প্রচারণা।

কর্তৃপক্ষ প্রথমে ওই বছরের ৪ ও ৫ নভেম্বর উদযাপন অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করলেও পরে তা পরিবর্তন করে ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বরে নিয়ে আসে।

সূত্রে জানা যায়, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করা নিয়ে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ বিনতে হুসাইন নাসরিন বানুর মতবিরোধ হয়। স্থানীয়দের দাবি ছিল সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে প্রধান অতিথি করা হোক। শতবর্ষ অনুষ্ঠান দাবিতে কারমাইকেল কলেজ অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ, ছবি: বাংলানিউজকিন্তু বিনতে হুসাইন নাসরিন চাইছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে প্রধান অতিথি করতে। এই জটিলতা থেকেই হুট করে শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

এরপর অনুষ্ঠান আয়োজনের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে মাঠে নামেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কলেজ প্রশাসন থেকে ফলপ্রসূ কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হচ্ছিল না।

এরমধ্যে অধ্যক্ষ পদে আসে পরিবর্তন। বিনতে হুসাইন নাসরিনের জায়গায় আসেন আব্দুল লতিফ মিয়া। তিনিও অনুষ্ঠান আয়োজনের সঠিক দিনক্ষণ জানাতে পারছিলেন না।

সেজন্য সামনের নভেম্বরকে ঘিরে ফের রোববার কলেজ শাখা ছাত্রলীগ, জাতীয় ছাত্রসমাজ, জাসদ ছাত্রলীগ ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে প্রশাসনিক ভবনে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে থাকে।

দুপুর ১টা পর্যন্ত অধ্যক্ষ অবরুদ্ধ থাকার পর কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেওয়া হয়, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে শতবর্ষ উদযাপন আয়োজন হবে। এ আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি তুলে নেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুজ্জামান সিজার, সাধারণ সম্পাদক জাবেদ আহমেদ, কলেজ শাখা জাতীয় ছাত্রসমাজের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আরিফ, কলেজ শাখা জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি বিপ্লব, সাধারণ সম্পাদক জেমি প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আরিফুল ইসলাম আরিফ বাংলানিউজকে বলেন, ডিসেম্বরে শতবর্ষ উদযাপনের আশ্বাসের প্রক্ষিতে আমরা অবরোধ তুলে নিয়েছি। আশা করি প্রশাসন সুষ্ঠ-সুন্দরভাবে আয়োজন সফল করবে। এজন্য জাতীয় ছাত্রসমাজ সদা প্রশাসনের পাশে থাকবে।

তিনি রংপুরের সন্তান ও কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি করার দাবি জানান।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৩ অক্টোবর) ছাত্র উপদেষ্টার বৈঠকে শতবর্ষ আয়োজনের চূড়ান্ত তারিখের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭
এএটি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।