ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

উচ্চশিক্ষার সুযোগ নেই আমলা সরকারি কলেজে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৭
উচ্চশিক্ষার সুযোগ নেই আমলা সরকারি কলেজে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ নেই আমলা সরকারি কলেজে

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমলা সরকারি ডিগ্রি কলেজ। ১৯৭২ সালের ১ জুলাই মুক্তিযোদ্ধা কৃষক নেতা শহীদ মারফত আলী এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে ৬.৩ একর জমিতে প্রতিষ্ঠা করেন কলেজটি। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালের ৩ নভেম্বর জাতীয়করণ করা হয় কলেজটিকে। 

উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসা শাখার পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রি (পাস) কোর্স চালু রয়েছে কলেজটিতে। তবে নেই সম্মান ও উচ্চশিক্ষার কোনো সুযোগ।

এতে হতাশ কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাধারণ অভিভাবকরা।

কুষ্টিয়া শহর থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে ইউনিয়ন পর্যায়ের সরকারি কলেজ এটি। দুই তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন, তিন তলা বিশিষ্ট বিজ্ঞানভবন, এক তলা বিশিষ্ট কলা ও তিন তলা বিশিষ্ট ডিগ্রিভবন ছাড়াও কলেজটিতে রয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক হোস্টেলের ব্যবস্থা। বর্তমানে কলেজটিতে ১২ শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছেন।

উচ্চ শিক্ষার সুযোগ নেই আমলা সরকারি কলেজেওই কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত সুমন ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, স্বপ্ন ছিলো ভালো কোনো বিষয়ে অনার্সে এ ভর্তি হবো। অর্থের অভাবে সেটা হয়নি। গ্রামের ছেলে তাই শহরে কিংবা বাইরে কোথায় গিয়ে পড়াশোনা করাও সম্ভব হয়ে উঠেনি। তাই বাড়ির কাছে আমলা সরকারি কলেজে ডিগ্রিতে ভর্তি হয়েছি। এখানে যদি অনার্স চালু করা হয় তাহলে আমাদের মতো গরীব ছাত্ররা অনার্স পড়তে পারবে। ভালো কিছু করতে পারবে।
 
আরেক শিক্ষার্থী শাহিন আলম বাংলানিউজকে জানান, এই কলেজে যদি অনার্স কোর্স চালু থাকতো তাহলে আমাদের অনেক উপকার হতো। যারা এই কলেজ থেকে ভালো রেজাল্ট করে, তারা অন্য কোথাও গিয়ে অনার্স পড়ে। কিন্তু যদি এই কলেজে অনার্স থাকতো তাহলে দূরে যাওয়া লাগতো না।

আমলা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ১৯৭২ সালে শহীদ মারফত আলী যখন কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন তখন তার স্বপ্ন ছিলো এই অঞ্চলের মানুষের উচ্চ শিক্ষা নিতে যেন দূরে না যাওয়া লাগে। বাড়ি থেকে এসে আমলা কলেজ থেকে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে দেশের জন্য কাজ করবে। কিন্তু তার স্বপ্ন আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এই কলেজে অনার্স কোর্স চালু হলে এলাকায় উচ্চ শিক্ষার প্রসার ঘটবে।

আমলা সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক আজিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, অত্র অঞ্চলের শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে আমলা সরকারি ডিগ্রি কলেজ। এখানে যদি অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয় তাহলে অত্র অঞ্চলসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের উচ্চ শিক্ষার বিস্তার ঘটবে। গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাবে।
উচ্চ শিক্ষার সুযোগ নেই আমলা সরকারি কলেজে
ওই কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মহব্বত হোসেন বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে কলেজটিতে অনার্স কোর্স চালুর জন্য চেষ্টা চলছে। ১৯ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও রয়েছে ১৫ জন। আরো নয়টি সৃষ্ট পদ সৃষ্টি হলে এই কলেজে অনার্স চালু হওয়ার দ্বার উন্মুক্ত হবে। শহর থেকে দূরে পাড়া গায়ের এই সরকারি কলেজে অনার্স চালু হলে উচ্চশিক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীরা দেশের কল্যাণে কাজ করবে এমনটাই আশা সকলের।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৭
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।