ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

অর্থাভাবে কি ঢাবিতে ভর্তি হতে পারবেন না রাজু?

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৭
অর্থাভাবে কি ঢাবিতে ভর্তি হতে পারবেন না রাজু? ইজাজুল ইসলাম রাজু/ছবি: সংগৃহীত

খুলনা: দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ইজাজুল ইসলাম রাজু। আদৌ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন কি-না তা নিয়েই এখন চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তার।

রাজুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর-৮৪০৫৩২, মেধাক্রম-১৪৩৯। ‘খ’ ইউনিটে মোট আসন সংখ্যা ২৩৬৩।

হত দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া এ ছেলেটি এবার ভর্তি পরীক্ষার মেধাক্রম অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছেন।

ভর্তির হওয়ার শেষ তারিখ ২৬ নভেম্বর। ভর্তির জন্য তার প্রয়োজন ১৩/১৪ হাজার টাকা। রাজুর পরিবারের পক্ষে এতো টাকা জোগাড় করা সম্ভব না। অর্থাভাবে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ এবং স্বপ্ন দুই-ই হাতছাড়া হতে বসেছে তার।

রাজু খুলনা মহানগরীর মৌলভীপাড়ার দোলখোলা রোডে ম্যাচে থেকে একটি ব্যাচে পড়ে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। তার বাবা যশোর জেলার কেশবপুর থানার দোরমুটিয়া গ্রামের মো. হেরমত আলী একজন ভূমিহীন কৃষক। বর্তমানে ক্ষুদ্র ব্যবসা করে কোনোমতে সংসার চালাচ্ছেন। মা মঞ্জুয়ারা বেগম গৃহিণী। তিন ভাই বোনের মধ্যে রাজু মেঝো। বড় বোন বিবাহিত ছোট বোন ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাজু বাংলানিউজকে বলেন, খুলনাই ম্যাচে থেকে পড়ার খরচ চালানোর জন্য আমার এক চাচার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মায়ের ছাগল বিক্রির টাকা দিয়ে ব্যাচের ও খুলনা থাকার খরচ চালানো হয়।

তিনি জানান, কেশবপুর পাইলট স্কুল থেকে এসএসসি পাসের পর কলেজে পড়ার খরচ জোগাড় করতে না পারাই এক মামার ফার্মেসিতে মাসে ১ হাজার ৮৫০ টাকার বিনিময়ে কাজ করে লেখাপড়ার খরচ চালাতেন। দোকানে দিনভর কাজ করার পর অনেক সময় ঠিকমতো পড়াশুনো করতে পারেননি।

রাজু বলেন, এতো দিন টেনেটুনে লেখাপড়া চালিয়ে এসেছি। কষ্ট করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্সও পেয়েছি। আমাদের অভাব-অনটনের সংসারে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে আমি অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। আমার স্বপ্নপূরণে কেউ এগিয়ে এলে আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।

রাজুর মা মঞ্জুয়ারা বেগম জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকের ছেলে তো চান্সই পায় না। রাজুতো পেয়েছে। এখন রাজুকে ভর্তি করার মতো অর্থ হাতে নেই। কিভাবে টাকা জোগাড় করবেন তা নিয়েই তিনি দুশ্চিন্তায় আছেন। আর কোনোভাবে ভর্তি করা গেলেও পরবর্তীতে কিভাবে পড়াশুনার খরচ জোগাবেন সে চিন্তাতেও কপালে ভাঁজ পড়ছে তার।

তিনি জানান, রাজুকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করার জন্য কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি বা সংস্থা যদি সহযোগিতার হাত বাড়ান তাহলে পূরণ হবে ছেলেটার ইচ্ছা।  
মোবাইল ফোনে রাজুর সঙ্গে সরাসরি কথা বলা যাবে- ০১৭১০২৪১৯৫৮ (বিকাশ) নম্বরে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা,  নভেম্বর ১৬, ২০১৭
এমআরএম/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।