রোববার (৬ মে) দুপুরে উপাচার্য তার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
উপাচার্য বলেন, ‘ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বলা হয়েছে তাকে (নাসির উদ্দিন) আবেদন করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, কিন্তু শাস্তির সর্বশেষ ধাপ অর্থাৎ বহিষ্কার করা হয়নি। চাকরিচ্যুত করার ফলে এখন তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করতে পারবেন ও কিছু সুযোগ-সুবিধাদি পাবেন। তাকে বহিষ্কার করা হলে সে সুযোগ থাকতো না। তাকে সে সুযোগটি দেওয়া হয়েছে। ’
নাসির উদ্দিনের চাকরিতে ফেরা বা ক্লাস নেওয়াকে গুজব আখ্যা দিয়ে উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, ‘অনেকে বলছেন ছাত্র প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে তাকে চাকরিতে বহাল করে ক্লাস নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে আমি আপনাদের জানাচ্ছি— এখন কোনওভাবেই সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত ছাড়া তাকে চাকরিতে বহাল করা হবে না। তার আবেদনের পর পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় এটি নিয়ে আলোচনা করার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ’
এর আগে সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করতে থাকেন। এসময় প্রায় ২০ থেকে ২৫টি বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল বর্জন করে শিক্ষার্থীরা। বেলা ১২টার দিকে উপাচার্যের সঙ্গে তার কনফারেন্স কক্ষে আলোচনায় বসেন ১৫ সদস্যের ছাত্র প্রতিনিধি দল।
প্রায় একঘণ্টা বৈঠক শেষে তারা তাদের আন্দোলন সফল হয়েছে দাবি করে জানান, উপাচার্য তাদের আশ্বাস দিয়েছেন শিগগিরই নাসির উদ্দিনকে চাকরিতে বহাল করা হবে এবং ওই শিক্ষককে ক্লাসে ফিরবেন।
এরপর পরই রোববারের জন্য আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ:
ইংরেজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাসির উদ্দিন ২০১৬ সালে অধ্যাপক পদে আবেদন করেছিলেন। অধ্যাপক পদে আবেদনের শর্তানুসারে তার জমা দেওয়া দু’টি আর্টিকেলের বিষয়ে জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া যায়। চীন থেকে প্রকাশিত লেখা হুবহু কপি করেছেন এবং যা ভিক্টোরিয়া ইউনির্ভাসিটিতে প্রকাশের জন্য গৃহিত হয়। একটি আর্টিকেলের ৮১ শতাংশ ও অন্যটির ৫২ শতাংশ লেখা কপি করা ছিল। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
নোটিশের পরিপ্র্রেক্ষিতে নাসির উদ্দিন কর্তৃপক্ষের কাছে কারণ দর্শানোর জবাব দেন। কারণ দর্শানোর জবাব যথাযথ প্রতীয়মান না হওয়ায়, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নাসির উদ্দিন অন্যজনের প্রকাশনা (আর্টিকেল)-এর লেখা নকল করার বিষয়টি তদন্ত কমিটির কাছে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সব বিধি বিধান অনুসরণ করে গত ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৭তম সিন্ডিকেট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তাকে চাকরি থেকে অপরসারণ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৭ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৮
কেডি/জিপি