ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ডাকসু নেতাদের শপথ নয়, হবে অভিষেক অনুষ্ঠান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৯
ডাকসু নেতাদের শপথ নয়, হবে অভিষেক অনুষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ভবনের ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: দীর্ঘ ২৮ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচন। তবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে ক্যাম্পাসে চলছে এখনো আন্দোলন।

ঘোষিত ফলাফলে ভিপি পদে জয়লাভ করেছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নুরুল হক নুর। ফলাফলের পর প্রথমে নুরকে ভিপি পদে মেনে না নিলেও পরবর্তীতে ছাত্রলীগ মেনে নিলে পাল্টে যায় দৃশ্যপট।

তখন ভিপি পদে নুর শপথ নেবেন, নাকি নেবেন না বিষয়টি সামনে চলে আসে। এ সংক্রান্ত নানা ধরনের কথা বলেন প্রার্থীরা। বিভিন্ন ‘বিব্রতকর প্রশ্ন’ শুনতে হয় কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্যানেল থেকে নির্বাচিত প্রার্থীদের। তবে ডাকসুর নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচিত নেতাদের কোনো ধরনের শপথের ব্যবস্থা নেই। হল সংসদ ও কেন্দ্রীয় সংসদের নেতাদের অভিষেক অনুষ্ঠান হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডাকসু ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র দু’টি খণ্ডে বিভক্ত। যেখানে কেন্দ্রীয় সংসদ অংশে নির্বাহী কমিটি, কার্যালয় বণ্টন, সংসদের তহবিল, শূন্যপদ পূরণ, গঠনতন্ত্রের সংশোধনসহ ১৬টি বিষয় উল্লেখ করা হয়। অন্যদিকে দ্বিতীয় খণ্ডে হল সংসদের নিয়মাবলী, কার্যক্রমসহ তেরোটি বিষয় তুলে ধরা হয়। সেখানকার কোথাও ডাকসুর নেতাদের কোনো ধরনের শপথ অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ নেই। হল সংসদের ৭২ নং ধারায় অভিষেক অনুষ্ঠানের কথা লেখা আছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘নির্বাহী কমিটি একটি ব্যায়ের বাজেট প্রস্তুত করবে এবং অভিষেক অনুষ্ঠানের ১৪ দিনের মধ্যে তা সংসদে উপস্থাপন করবে। ’

ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন করা কমিটির প্রধান ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ডাকসুর নেতাদের শপথের কথা কোথাও লেখা নেই। দায়িত্বগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়।

এদিকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর নূরের শপথ গ্রহণ নিয়ে নানা ধরনের বক্তব্য আসে। বাম জোটের সঙ্গে এ সংক্রান্ত মতানৈক্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে খোদ কোটা আন্দোলনের নেতা ফারুক হোসেনের কাছেও। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যেখানেই আমরা পুনর্নির্বাচন দাবি করছি সেখানে শপথ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। নির্বাচন পরবর্তী সব প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যম সাংবাদিকরাও বারবর ভিপি নুরের কাছে প্রশ্ন রাখেন শপথ নিবেন কিনা? বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সব বিষয় নিশ্চিত হয়ে প্রশ্ন করা উচিত। না জেনে প্রশ্ন করাটা বিব্রতকর।

ডাকসুতে নির্বাচন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। সে সময়ের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমদের শপথ নেওয়ার কোনো ধরনের নিয়ম ছিল না। হল সংসদ ও কেন্দ্রীয় সংসদের অভিষেক অনুষ্ঠান হতো। বর্তমানেও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অভিষেক অনুষ্ঠান হবে। সংসদের মেয়াদ অভিষেক অনুষ্ঠান থেকে এক বছর।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, নির্বাচিতদের দায়িত্বগ্রহণ নিয়ম অনুযায়ী যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে।

২৮ বছর পর গত ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুল ইসলাম নুর। আর জিএস পদে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী নির্বাচিত হন। ভিপি পদে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন পরাজিত হয়েছেন নুরের কাছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৯
এসকেবি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।