শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের টানা ১১তম দিনে শনিবার (০৬ এপ্রিল) জেলা সার্কিট হাউজে এ বিষয়ে বৈঠকে বসেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ স্থানীয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বৈঠকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে হল আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেয়া হবে। পাশাপাশি ডাইনিংও চালু করে দেয়া হবে। আর শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবনের কিছু জায়গায় তালা দিয়েছেন, সেগুলো খুলে দিলে রোববার থেকে ক্লাস-পরীক্ষাসহ একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।
তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ আজ (রোববার) সন্ধ্যার মধ্যে দিয়ে দেয়া হবে।
এদিকে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মহিউদ্দিন আহমেদ সিফাত বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে অভিভাবকসূলভ আচরণ না পাওয়ায় সুধী সমাজের হস্তক্ষেপে সেটা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হোক এই কামনা আমরা করি।
তিনি বলেন, সভায় আমাদের দাবি পূরণে আশ্বাস দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে উপাচার্যকে (ভিসি) ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা অর্থাৎ বরিশালে ঢুকতে দেয়া হবে না-মর্মে শতভাগ আশ্বাস পাওয়ায় বৈঠকের সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমরা একমত।
তবে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা না করে দেয়া হবে না বলে জানান এই ছাত্র প্রতিনিধি।
বৈঠকের বিষয়ে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মনে করি ছাত্রদের দাবি যৌক্তিক। বিশ্ববিদ্যালয় ও উপাচার্যর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হবে। তিনিই উপাচার্যর বিষয়টি দেখবেন। আশাকরি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার সমাধান করা হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি বর্তমান উপাচার্য যেনো আর ক্যাম্পাসে না আসেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপাচার্যের মেয়াদ যেহেতু অল্প কদিন রয়েছে। তাই তাকে ছুটিতে চলে যাওয়ার জন্য বলা হবে। তাকে সভার এ সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
তিনি বলেন, এর আগে ২২ দফা দাবি পেশ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। এসব দাবি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করার জন্য রেজিস্ট্রারকে বলা হলে তিনিও আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। পাশাপাশি বরিশালের কেউ সিন্ডিকেটের সদস্য না হওয়ায় সমস্যা দেখা দিলে সমাধান করাটা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, এ বিষয়েও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে, যাতে বরিশালের কেউ একজন সিন্ডিকেট সদস্য হতে পারেন।
বৈঠকে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস, পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত আইজিপি) মোশারেফ হোসেন, জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষক প্রতিনিধি ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানোর কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের সন্তান’ বলে গালি দিলে আন্দোলন আরো বেগবান হয়।
এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। তবে এই বন্ধের পরও হল ত্যাগ না করে টানা ১২ দিন আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। এতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা বিরাজ করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৯
এমএস/এমএ