ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বেসরকারি শিক্ষকদের জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তির দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
বেসরকারি শিক্ষকদের জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তির দাবি সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল বেসরকারি কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষিকারা। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশাল বিভাগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত স্নাতক (সম্মান) স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ২৭ বেসরকারি কলেজের শিক্ষকদের প্রচলিত জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করেছেন শিক্ষকরা। একই সঙ্গে ওই সব কলেজগুলো এমপিওভুক্তিরও দাবি জানান তারা।

রোববার (৩০ জুন) দুপুর ১২টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বেসরকারি অর্নাস-মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদের বরিশালের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান মনি।

তিনি বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চ শিক্ষা বিস্তারের লক্ষে ১৯৯৩ সালে সরকার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বেসরকারি কলেজসমূহে অর্নাস-মাস্টার্স কোর্স চালু করে। বিগত ২৬ বছর ধরে অর্নাস-মাস্টার্স কোর্স চালু হওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ওই সব শিক্ষকদের সরকারি জনবল কাঠামোতে অর্ন্তভুক্ত করা হয়নি।

দেশে প্রায় ২০১টি বেসরকারি কলেজে অর্নাস-মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগে ২৭টি কলেজ রয়েছে। এই ২৭ কলেজের প্রায় এক হাজার শিক্ষক পাঠদান করছেন। ওই সব শিক্ষকরা মাত্র তিন হাজার টাকা থেকে পাঁচশ’ টাকা সম্মানী পাচ্ছেন। যা দিয়ে একজন শিক্ষকের পক্ষে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করা অসম্ভব।

তিনি আরো বলেন, মাদ্রাসা পর্যায়ে আলিম, ফাজিল ও কামিল শ্রেণির শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হতে পারেন কিন্তু অনার্স-মাস্টার্স শ্রেণির শিক্ষকরা এমপিওভুক্তি থেকে বঞ্চিত। বিষয়টি নিয়ে দেশব্যাপী আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসলেও সরকার কোনো কর্ণপাত করছে না।  

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানান, বেতন ভাতা না পাওয়ায় অনেক বেসরকারি কলেজের শিক্ষকরা খণ্ডকালীন কাজ করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করছেন। পাশাপাশি কেউ অটোরিকশা চালান, কেউ আবার শ্রমিককের কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এসব শিক্ষকদের কলেজে ভর্তি, ফরম ফিলাপ এর দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। এসব টাকা পেলেই শিক্ষকদের কয়েক মাসের বকেয়া টাকা পরিশোধ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনে এসব শিক্ষকরা দ্রুত এমপিওভুক্ত করে তাদের জীবনের নিশ্চয়তা দেওয়ার দাবি করেছেন। একই সঙ্গে তারা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার  হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

বঞ্চিত এসব শিক্ষকরা বলেন, নবম ও দশম জাতীয় সংসদে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের সুপারিশ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর আশ্বাসের পরও তাদের দাবি বাস্তবায়নে কেউ এগিয়ে আসেনি। এরপর ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন করা হয়। এর প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ওই বছর ২৪ আগস্ট রিটের রায় দিয়ে এমপিওভুক্তির নির্দেশ দেন। রায় অনুযায়ী আবেদনকারীদের জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভূক্ত করে এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। হাইকোর্টের ওই নির্দেশনার পর ২০১৮ সালের ১৭ মে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর থেকে জানানো হয় জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত না থাকায় ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করা সম্ভব নয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা সভাপতি মো. ইউনুস শরীফ, জেলা সাধারণ সম্পাদক মো. রমজান আলী নয়ন, মৃত্তিকা দাস, নুসরাত রুমানা, মিজানুর রহমান, মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
এমএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।